বুধবার সকালে সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের কামদিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
তবে কওমি মাদ্রাসার সমর্থকরা এই হামলায় তাদের সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করেছেন।
এলাকাবাসী জানান, সালথা-নগরকান্দা সড়কের পাশে কামদিয়া গ্রামে আহলে হাদিসের ওই মাদ্রাসটি স্থাপিত হয় ২০১৯ সালে। ভিত পাকা দুটি টিনের বড় ঘরে এই মাদ্রাসার কার্যক্রম চলে। এই মাদ্রাসায় ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীরা আবাসিক হিসেবে থেকে পড়াশোনা করে।
আহলে হাদিস মাদ্রাসার পরিচালক ইলিয়াস হোসেন বলেন, বুধবার সকালে দুই/তিনশ লোক তাদের মাদ্রাসায় হামলা চালায়। ওই সময় মাদ্রসায় ৩৫ জন নিবাসী ও চারজন শিক্ষক ছিলেন। হামলাকারীদের ভয়ে তারা মাদ্রাসা ছেড়ে পালিয়ে যান। এরপর হামলাকারীরা মাদ্রসার দুটি ঘর ভাঙচুড় করে।
“তারা ১৪টি সিলিং ফ্যান, একটি সৌর বিদ্যুতের সোলারসহ নিবাসীদের যাবতীয় মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়। এর ফলে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।”
ইলিয়াস হোসেন আরও বলেন, পুলিশের সামনেই মাদ্রাসায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীদের তুলনায় পুলিশের সংখ্যা কম থাকায় পুলিশ চেষ্টা করেও হামলাকারীদের প্রতিহত করতে পারেনি। পরে পুলিশের সামনেই এই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
সালথা হেফাজতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জিন্নাত বলেন, “ইউএনওর সঙ্গে বৈঠকের পর বুধবার ভোরেই আমি উপজেলা হেফাজতের সভাপতি নিজামউদ্দীনসহ কওমি মাদ্রাসার নেতারা উপজেলায় চলে আসি। পরে জানতে পারি কওমি মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থী হাসিবুল ইসলামকে আহলে অহাদীদের সমর্থকরা বেদম মারপিট করেছে।”
সালথার ইউএনও মোহাম্মদ হাসিব সরকার বলেন, মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদে দুইপক্ষকে নিয়ে সভা করেছেন। ওই সময় পর্যন্ত দুই পক্ষকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। রাতে আহলে হাদিস মাদ্রাসায় পুলিশও মোতায়েন করা হয়।
হামলার ঘটনা শোনার পর তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জানিয়ে বলেন, ওই মাদ্রাসায় যে ৩৫ জন নিবাসী ছিল তাদের সবাইকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কারা এই হামলায় জড়িত ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সালথা থানার ওসি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, কাওমিপন্থি শিক্ষক ও আহলে হাদিস শিক্ষকের নিয়ে এলাকায় বিরোধ চলছিলে। এই বিরোধ নিরসনে বুধবার সকাল ১০টায় দুই পক্ষকে নিয়ে উপজেলা পরিষদে আলোচনার কথা ছিল। কিন্তু কওমিপন্থি একটি অংশ উপজেলায় এলেও অপর অংশ ওই মাদ্রসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।
তিনি জানান, যারা এই হামলায় জড়িত তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।