সিলেটে গ্রিড উপকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ড ট্রান্সমিটারের জ্বালানি থেকে

সিলেটের কুমারগাঁওয়ে গ্রিড উপকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ট্রান্সমিটারের জ্বালানি থেকে হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2020, 05:26 PM
Updated : 17 Nov 2020, 05:53 PM

অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানতে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বিপর্যয়ে বিপাকে পড়েছেন বাসা-বাড়ি ও হাসপাতালে রোগীসহ সবাই। বিদ্যুৎ না থাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে সিলেট শহরে।

সিলেট ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক শওকত হোসেন বলেন, “ট্রান্সমিটারের জ্বালানি তেল থেকে এই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।”

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে সিলেটের পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছেন।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির নিয়ন্ত্রণাধীন গ্রিডলাইনের এই অগ্নিকাণ্ডের কারণে প্রায় সাড়ে চার লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েন।

পরে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

আগুন নেভাতে গিয়ে জয়ন্ত কুমার নামে এক ফায়ার সার্ভিসকর্মী দগ্ধ হন। তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিদুৎ সরবরাহ করা যেতে পারে বলে পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন জানিয়েছেন। তবে ঠিক কত সময় লাগবে তা তারা নিশ্চিত করতে পারেননি।

কর্মকর্তারা জানান, একসঙ্গে সব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ত সম্ভব হবে না। দুই দিনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত সব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করার চেষ্টা করা হবে।

সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোকাম্মেল হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে অনেক সময় লাগবে। আগুনে গ্রিডলাইন ও ট্রান্সমিটারের অনেক ক্ষতি হয়েছে। বেশ কিছু যন্ত্রপাতি পুড়ে গেছে। পিডিবি ও পিজিসিবি একসঙ্গে সংস্কারের কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত যন্ত্রপাতি সংস্কার ও পরিবর্তন করতে হবে।

আগুনের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকার বিষয়টি নগরবাসীকে জানাতে বেলা ২টা থেকে মাইকিং করা হয়েছে।

অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানতে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগ ২-এর নির্বাহী প্রকৌশলীকে আহ্বায়ক করে এ কমটি গঠন করা হয়।

কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে নির্বাহী পরিচালক (ওএন্ডএম) পিজিসিবি বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে বলে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের উপ-মহাব্যবস্থাপক রূপক মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ্ জায়েদী স্বাক্ষরিত এক পত্রে জানানো হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, অগ্নিকাণ্ডে ২০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন তারা। আগুনে প্রায় ৭০ কোটি টাকার ২৫/৪১ এমবিএ দুটি ট্রান্সফরমারও পুড়ে গেছে। ট্রান্সফরমারগুলোর বাইরের অংশ পুড়লেও ভেতরে কোনো ক্ষতি হয়েছে কিনা তা এখনও জানা যায়নি।

পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোকাম্মেল হোসেন বলেন, তাদের প্রায় ৪ লাখ ৩০ হাজার গ্রাহক আছেন। বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বিপর্যয় হওয়ায় প্রায় তিন লাখ গ্রাহক দুর্ভোগে পড়েছেন। বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে তারা চেষ্টা করছেন। গ্রিডের লোকজনও অবিরাম কাজ করছে।

সিলেটের ডিসি এম কাজি এমদাদুল ইসলাম জানান, বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন। ঢাকা থেকেও একটি দল সিলেটে আসছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বিপর্যয়ে বিপাকে পড়েছেন বাসা-বাড়ি ও হাসপাতালে রোগীসহ সিলেট শহরের সবাই। বিদ্যুৎ না থাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে শহরে।