মাদারীপুরে দুই হাসপাতালের দুই রিপোর্ট, মামলার ফাঁদে এক পরিবার

মাদারীপুরে শহরের দুই হাসপাতালে দুই দিনের ব্যবধানে দুই রকম ফলাফলের রিপোর্ট প্রদান করার খবর মিলেছে। আর এ রিপোর্ট দিয়ে এক পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।

মাদারীপুর প্রতিনিধিরিপনচনদ্র মল্লিক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Nov 2020, 06:19 AM
Updated : 9 Nov 2020, 06:19 AM

এ ঘটনায় মাদারীপুর শহরের সেতারা জেনারেল হাসপাতাল নামে একটি প্রাইভেট হাসপাতালের বিরুদ্ধে মিথ্যা গর্ভপাতের রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর ‘এ রিপোর্টের ভিত্তিতে করা হয়েছে মামলাও’।

ওই মামলার আসামি  মাদারীপুর সদর উপজেলার হাজরাপুর গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ আকন এর প্রতিকার ও বিচার চেয়ে গত ২৯ অক্টোবর সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

তার অভিযোগের সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার হাজরাপুর গ্রামের শিল্পী বেগম গর্ভবতী না হওয়ার জন্য ইনজেকশন গ্রহণ করেন।

২৮ সেপ্টেম্বর মাদারীপুর শহরের ‘বাবু চৌধুরী জেলারেল হাসপাতাল’ নামের প্রাইভেট ক্লিনিকে আলট্রাসনোগ্রাম ও প্রেগনেন্সি টেস্টে তিনি গর্ভবতী নন বলে রিপোর্ট দেয়।

তবে ৩০ সেপ্টেম্বর শহরের সেতারা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক এনামুল হক শিল্পী বেগমকে গর্ভবতী উল্লেখ করে আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট প্রদান করেন।

চিকিৎসক এনামুল হকের এ রিপোর্টের ভিত্তিতে শিল্পী বেগম তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলা হয়েছে দাবি করে মাদারীপুর সদর উপজেলার হাজরাপুর গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ আকনসহ কয়েকজনকে আসামি করে মাদারীপুরে কোর্টে একটি মামলা করেন।

এ বিষয়ে মাসুদ আকন জানান, শিল্পী বেগমের সাথে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঝগড়া হয়। এ ঝগড়ার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে।

“মামলায় দাবি করেছে সে গর্ভবতী ছিল। অথচ দুই দিনে ব্যবধানে দুই হাসপাতালে দুই রকম রিপোর্ট দিয়েছে।”

মাসুদের অভিযোগ, সেতারা হাসপাতালের চিকিৎসক এনামুল হক মোটা অংকের টাকা খেয়ে মিথ্যা রিপোর্ট দিয়েছেন।

“আমরা গরিব মানুষ। এ মিথ্যা রিপোর্টের কারণে আমার পরিবারের সবাই মামলা মোকাদ্দমার ভোগান্তিতে পড়েছি। আমরা এই চিকিৎসকের বিচার চাই।”

এ ব্যাপারে ওই চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করতে একাধিক বার হাসপাতালে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরে তিনি ‘অজ্ঞাত কারণে’ সেতারা হাসপাতালে আসেননি।

তবে মাদারীপুরের সেতারা জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিরু চৌধুরী বলেন, দুই হাসপাতালের রিপোর্ট দুই রকম কেন সেটা চিকিৎসক ভালো বলতে পারবেন। আমার জানা নেই।

এ ব্যাপারে মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের বিষয়টি আমি জেনেছি। এ ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।