সমাজসেবা কার্যালয়ে সাংবাদিককে ‘পিটুনি’, থানায় জিডি

দুর্নীতির বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহে মেহেরপুর জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয়ে যাওয়া দুই সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে।

মেহেরপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2020, 01:05 PM
Updated : 8 Nov 2020, 01:05 PM

রোববার জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে বলে থানায় করা জিডিতে অভিযোগ করা হয়।

হামলার শিকার দুই সাংবাদিক হলেন ডিবিসি টেলিভিশনের মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি আবু আক্তার করণ এবং অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলাদেশ রয়টার্সের মেহেরপুর প্রতিনিধি জাকির হোসেন।

এই ঘটনায় আবু আক্তার করণ বাদী হয়ে মেহেরপুর জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল কাদের, অফিস স্টাফ সাজ্জাদ হোসেন এবং আব্দুল কাদেরের ব্যক্তিগত গাড়ি চালক মিলন শেখসহ অজ্ঞাত ৮/৯ জনের নামে মেহেরপুর সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর-৩৩৯; তারিখ ০৮ নভেম্বর ২০২০) করেছেন।

আবু আক্তার করণ সাংবাদিকদের বলেন, অফিসের তেল চুরি, সরকারি গাড়ি নিয়ে জেলার বাইরে ঘুরতে যাওয়া, অফিসের ভেতর রাত্রিযাপনসহ নানা বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে।

জিডিতে তিনি অভিযোগ করেন, এসব বিষয়ে সাক্ষাৎকার নিতে গেলে মেহেরপুর জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাসহ তার অফিসের কিছু স্টাফ তাদের ওপর চড়াও হন।

“এক পর্যায়ে ডিডি বলে ওঠেন, ‘শালারা দুনীতির নিউজ করবে, শালাদের ধর’। এরপর অফিস স্টাফরা তাকে জাপটে ধরেন এবং ডিডি আব্দুল কাদের নিজে আমাকে চড়থাপ্পড় মারেন।”

এই সময় স্টাফরা তার পকেট থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকা হাতিয়ে নেন বলেও তিনি জিডিতে অভিযোগ করেন।

অভিযোগ আরও বলা হয়, ওই সময় সাংবাদিক জাকির হোসেন তাকে উদ্ধারে এগিয়ে গেলে ডিডিসহ তিনজন তাকে অফিসের একটি কক্ষে ঢুকিয়ে কিলঘুষি মারেন এবং তার হাতে থাকা ভিডিও ক্যামেরা ভাংচুর করেন।

পরে খবর পেয়ে সদর থানার পুলিশ গিয়ে ওই সাংবাদিকদের উদ্ধার করে। হামলার শিকার দুই সাংবাদিক প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।   

জেলায় কর্মরত অন্য সাংবাদিকরা এই বিষয়ে সমাজসেবার ডিডিকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সরকার তাকে গাড়ি দিয়েছে ২৪ ঘণ্টা ব্যবহারের জন্য। সরকারি কাজে গাড়ি নিয়ে অন্য জেলায় যেতে কোনো আইনি বাধা নেই। সরকার গাড়ি দিলেও ড্রাইভার দেননি। তাই ব্যক্তিগত ড্রাইভার দিয়ে তিনি সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন। গাড়ি নিয়ে বাইরে গেলে বেশি তেল ব্যবহার হবেই।

ব্যক্তিগত নিরাপত্তার কথা ভেবে এবং বাড়ি ভাড়া না পাওয়ায় তিনি অফিসের একটি কক্ষে থাকেন বলে স্বীকার করেছেন।

তবে তার বিরুদ্ধে হিজড়াদের ট্রেনিংয়ের টাকা আত্বাসাৎ, নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি তার।

তিনি আরও বলেন, “সাংবাদিক দুজন আমার উত্তেজিত হওয়ার ছবি ক্যামেরাবন্দি করলে আমি রেগে গিয়ে ক্যামেরা কেড়ে নিই। ভাংচুর করিনি। এই সময় আমার স্টাফরা সাংবাদিক দুজনের গায়ে হাত দিলেও তেমন মারধর করেনি।”

মেহেরপুর সদর থানার ওসি শাহ দারা খাঁন বলেন, সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায় সরাসরি মামলা নেওয়ার আইনি জটিলতা রয়েছে। ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করে ডিডিসহ তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৮-৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় জিডি হয়েছে।

মেহেরপুর পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী বলেন, মামলা নেওয়া যাবে না। জিডি হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে মামলায় রুপ নেবে। তবে উভয়পক্ষ বসে বিষয়টি আপোষ করে নিলে ভালো হবে।