শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের নির্দেশ

বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা না মানায় রাজশাহীর শাহ্ মখদুম মেডিকেল কলেজে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে ছাত্রছাত্রী ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Nov 2020, 01:17 PM
Updated : 6 Nov 2020, 01:19 PM
একই সঙ্গে কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধীন অন্য বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে মাইগ্রেশনের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

গত সোমবার (২ নভেম্বর) শাহ্ মখদুম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব বদরুন নাহার স্বাক্ষরিত পত্রে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।  

তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ এই নির্দেশনা পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেছে এবং তা নাহলে আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথা জানিয়েছে।

রাজশাহী নগরের খড়খড়ি এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এই মেডিকেল কলেজটির চেয়ারম্যান রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী।

২০১৪ সাল থেকে কলেজটিতে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু হয়। বর্তমানে সাতটি ব্যাচে ২২৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।

প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ না করায় কলেজটি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধন পায়নি। নিবন্ধন না থাকায় এখান থেকে এমবিবিএস পাস করা চার শিক্ষার্থী ইন্টার্নশিপ করতে না পেরে এক বছর বসেছিলেন। এই অবস্থায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন। আন্দোলনের মুখে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়।

পরে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কলেজ খোলা রাখা এবং বিকল্প ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

মন্ত্রণালয়ের সোমবারের চিঠিতে বলা হয়, এই মেডিকেল কলেজ বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা ২০১১ (সংশোধিত) এর শর্তসমূহ প্রতিপালন না করায় ২০১৯ সালের ১০ মার্চ কলেজ পরিদর্শন করা হয়। ওই সময় কিছু ঘাটতি পূরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু এরপর এই বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি আবার পরিদর্শনে একই ঘাটতি পাওয়া যায় এবং কলেজ মানসম্মত করার সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

তাই কলেজটিতে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে ছাত্রছাত্রী ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এই বিষয়ে কলেজেটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীন বলেন, সম্পূর্ণ নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। যেমন বলা হয়েছে কলেজের ৬০ হাজার বর্গফুট জায়গার ঘাটতি রয়েছে; বলা হয়নি যে কতটুকু আছে। আবার বলা হয়েছে, গ্রন্থাগারের ২২০ জন শিক্ষার্থীর আসন ব্যবস্থার ঘাটতি রয়েছে; কিন্তু কতজনের ব্যবস্থা আছে তা বলা হয়নি।

কলেজে মোট শিক্ষার্থী ২২৫ জন জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিবেদনে প্রত্যেক বিভাগে ৪-৫ জন করে শিক্ষক ঘাটতির কথা বলা হয়েছে; কিন্তু কতজন শিক্ষক আছে তা বলা হয়নি।

৪৪ জন স্থায়ী এবং ২৪ জন খণ্ডকালীন শিক্ষক দেখানো আছে বলে তিনি জানান।

মনিরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি পুনঃবিবেচনার জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। এই আদেশের ফলে অনেক শিক্ষার্থীর পড়াশোনা অনিশ্চিত হয়ে যাবে।

আবেদনে কাজ না হলে রিট আবেদন করে আদেশটি স্থগিত করা হবে বলে জানান তিনি।