পদ্মা সেতু সংলগ্ন মাঝের চরে নদী ভাঙন, গৃহহীন দুইশ পরিবার

পদ্মা সেতুর ৪০০ মিটার দূরে জাজিরা উপজেলায় নদীভাঙনে চারটি গ্রামের দুইশ’র বেশি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে।

কে এম রায়হান কবীর শরীয়তপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Nov 2020, 07:51 AM
Updated : 4 Nov 2020, 10:31 AM

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলছেন, পদ্মা সেতুর নিচে ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারের পূর্ব পাশে ‘অপরিকল্পিতভাবে’ পদ্মায় বাঁধ নির্মাণ করার কারণে এ নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।

গত ২৯ অক্টোবর থেকে জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবার পাইনপাড়া, আহম্মদ মাঝির কান্দি, মোল্লা কান্দি ও ওসিমউদ্দিন মাদবর এলাকায় এ নদী ভাঙন শুরু হয় বলে স্থানীয়রা জানান।

পাইনপাড়া এলাকার ওহাব মাঝি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পদ্মা সেতুর ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারের পূর্ব-পশ্চিমে আড়াআড়ি বাঁধ নির্মাণ করার কারণে নদীতে তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভাঙনের কবলে পড়ে গত এক সপ্তাহে দুই শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়েছে। তারা মাঝের চরে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছেন।“

এছাড়া আরও শতাধিক ঘড়বাড়ি ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে বলে জানান ওহাব।

ওই এলাকার রোকন মাঝি ও ইমান মাঝি জানান, পাইনপাড়া ছাড়া্ও পূর্ব নাওডোবার আহম্মদ মাঝির কান্দি, মোল্লা কান্দি ও ওসিমউদ্দিন মাদবর কান্দিতে পদ্মা নদীর ভাঙনে গত ১ সপ্তাহে দুই শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়েছে।

ভাঙন প্রতিরোধ এবং ওই বাঁধ কেটে দেওয়ার দাবিতে স্থানীয়রা মাঝের চরে ভাঙন এলাকায় মানববন্ধন করেছে বলে জানান তারা। 

এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, পদ্মা সেতুর পূর্ব-পশ্চিমে আড়াআড়িভাবে একটি বাঁধ নির্মাণ করার কারণে সেতুর মাত্র ৪০০’ মিটার দূরে নতুন করে ভাঙ্ন শুরু হয়েছে। এতে ওইসব এলাকার মানুষ আতঙ্কে সময় কাটাচ্ছে। অনেকেই মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে; অনেকে আবার সব হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

আহম্মদ মাঝির কান্দি এলাকায় কথা হয় ভাঙনের কবলে পড়া আমির হোসেন হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, “আমাদের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় এক আত্মীয়র বাড়ি আশ্রায় নিয়েছি। এভাবে ভাঙতে থাকলে আরও অনেক লোক নিঃস্ব হবে।”

পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের পাইনপাড়া গ্রামের আলাউদ্দিন ফকির বলেন, “গত ১ সপ্তাহে নদী ভাঙনের কারণে বসতভিটা হারিয়ে অনেকেই এলাকা ছেড়ে চলে গেছে।  কে কোথায় চলে গেছে তাও আমরা জানি না। ভাঙন অব্যাহত থাকলে আমাদেরও সব হারিয়ে চলে যেতে হবে।”

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, “বিষয়টি সেতু কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আর পদ্মা সেতুর নিবার্হী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আবদুল কাদের বলেন, “নদীর মাঝের চর ভাঙবেই। আমরা বাঁধ দেওয়ার কারণে বরং কম ভাঙচ্ছে।”