সুন্দরবন পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে ১ নভেম্বর

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সাত মাস পর প্রত্যাহার হচ্ছে রোববার।

খুলনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Oct 2020, 05:52 PM
Updated : 29 Oct 2020, 05:52 PM

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বৃহস্পতিবার একথা জানান। 

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে গত ১৯ মার্চ থেকে সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল বনবিভাগ। রোববার থেকে পর্যটকরা আবার সুন্দরবন ভ্রমণে যেতে পারবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে বন অধিদপ্তরকে এই সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

বনে প্রবেশ করা বিষয়ে উপমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি জলযানে ৫০ জনের বেশি পর্যটক যেতে পারবেন না। এছাড়া করোনাভাইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্যুর পরিচালনা করার জন্য ট্যুর অপারেটরদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আযম ডেভিড বলেন, ইতোমধ্যে তারা সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য পর্যটকদের বুকিং নেওয়া শুরু করেছেন।

প্রায় সাড়ে সাত মাস ট্যুর বন্ধ থাকায় ট্যুর অপারেটররা আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে তিনি জানান।

অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মইনুল ইসলাম জমাদ্দার বলেন, সুন্দরবনকেন্দ্রিক খুলনা ও মোংলায় ৬৩টি ট্যুর কোম্পানির কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী সাত মাস ধরে বেকার হয়ে আছেন। বনে পর্যটক প্রবেশের অনুমতির খবর তাদের মধ্যে আশার আলো জাগিয়েছে।

ভ্রমণ সংস্থাগুলোর প্রস্তুতি

এদিকে, বৃহস্পতিবার খুলনার ৪ নম্বর ঘাট, ফরেস্ট ঘাট, রূপসা এলাকা ও আঠারোবেকি নদীতে ভ্রমণ সংশ্লিষ্ট লঞ্চগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে দেখা গেছে।

সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, সুন্দরবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সাবধানতা মানতে হবে। এ কারণে ২৫ জনের গ্রুপ করে বনে নামতে বলা হয়েছে যাতে অতিরিক্ত লোকসমাগমে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি না হয়।

“এছাড়া প্রতি লঞ্চে বনবিভাগের লোকজন থাকবে। একবার ট্যুর শেষে পুরো লঞ্চটি স্যানিটাইজ করতে বলা হয়েছে। ট্যুর অপারেটরদেরও তাদের ব্যবসায়িক দিক চিন্তা করে যাবতীয় শৃঙ্খলা অনুসরণ করতে হবে।”

আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, প্রতি বছর গড়ে প্রায় দেড় লাখ পর্যটক সুন্দরবন ভ্রমণ করে থাকে। সর্বশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছরে সুন্দরবন ভ্রমণ করেন এক লাখ ৭২ হাজার ৯৭৯ জন পর্যটক।

এর মধ্যে দেশি পর্যটক এক লাখ ৭০ হাজার ৬৬২ জন এবং বিদেশি পর্যটক ছিলেন দুই হাজার ৩১৭ জন বলে তিনি জানান।

এই খাত থেকে বনবিভাগের এক কোটি ৮৮ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছিল বলেও তিনি জানান।

পর্যটকরা সাধারণত সুন্দরবনের কটকা, কচিখালি, দুবলার চর, হিরণ পয়েন্ট, হাড়বাড়িয়া, কলাগাছিয়া ও করমজল স্পটগুলো ভ্রমণ করেন বলে জানান এই বন কর্মকর্তা।