‘মাইক্রোবাসে তুলে গৃহবধূকে ধর্ষণ’, গ্রেপ্তার ৪

পঞ্চগড়ে ‘বিয়ের প্রলোভনে ভাগিয়ে নিয়ে’ মাইক্রোবাসে তুলে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পঞ্চগড় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Oct 2020, 02:18 PM
Updated : 28 Oct 2020, 04:24 PM

এই অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বলা হয়, সোমবার রাতে বোদা উপজেলার পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার থানায় মামলা করা হয়।

গ্রেপ্তার চার আসামিকে বুধবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের সোনাপাড়া গ্রামের জাহিদুল ইসলাম রতন (২৫), ওই গ্রামের অটোরিকশা চালক আমিরুল ইসলাম (৩০), পঞ্চগড় পৌর এলাকার নিমনগর মহল্লার মাইক্রোবাস চালক শহিদুল ইসলাম (২৭) ও সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামের নুর আলম (২৪)।

বোদা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার কদন্ত কর্মকর্তা আবু সায়েম মিয়া বলেন, ওই গৃহবধূর মামলায় জাহিদুল ইসলাম রতন ও মাইক্রোবাস চালক শহিদুল ইসলামকে ধর্ষণকারী এবং আমিরুল ইসলাম ও নুর আলমকে ধর্ষণে সহযোগী বলা হয়েছে।

এই চারজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার কথা স্বীকার করেছে; আরও তথ্য পেতে তাদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে বলে জানান সায়েম।

এজাহারের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরও বলেন, ময়দানদিঘী ইউনিয়নের ওই গৃহবধূর সঙ্গে সম্প্রতি একই এলাকার সোনাপাড়া গ্রামের জাহিদুল ইসলাম রতনের পরিচয় হয়। রতন মাঝে মধ্যে ওই গৃহবধূকে ফোন করে খোঁজ খবর নিতেন।

“গত ২৬ অক্টোবর দুপুরে ওই গৃহবধূর সঙ্গে স্বামীর ঝগড়া হয়। বিকালে রতন গৃহবধূর মোবাইলে কথা বলে বিষয়টি জেনে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। গৃহবধূও প্রলোভনে পড়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে ময়দানদিঘী বিআরটিসি কাউন্টারে যান।”

সায়েম আরও বলেন, সেখানে রতন গৃহবধূকে বিয়ের জন্য কাজী অফিসে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আমিরুলের অটোরিকশায় বোদা বাজার হয়ে পঞ্চগড় রেলস্টেশনে নিয়ে যান। সেখানে খাওয়া দাওয়ার পর গভীর রাতে শহিদুলের মাইক্রোবাসে মালাদাম এলাকায় এক বন্ধুর বাড়ি যান। সেখান থেকে পঞ্চগড় মৈত্রী ফিলিং স্টেশনের সামনে এসে গাড়ি থামান।

অভিযোগের বরাতে সায়েম বলেন, এ সময় ওই গৃহবধূ তাদের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে চিৎকার করলে তারা তাকে মারধর করেন এবং এক পর্যায়ে রতন তাকে ধর্ষণ করেন। পরে চালক শহিদুলও তাকে ধর্ষণ করেন। তারা দুজনে ভোর পর্যন্ত গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। এ সময় অটোরিকশাচালক আমিরুল ও নুর আলম বাইরে পাহারা দেন। ভোরে ওই গৃহবধূকে রতন ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটরসাইকেলে বোদা বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেন।

সায়েম জানান, খবর পেয়ে ওই গৃহবধূর স্বামী তাকে সেখান থেকে বাড়ি নিয়ে যান। বাড়ি ফিরে মঙ্গলবার রাতে ওই গৃহবধূ স্বামীকে ঘটনা জানান ও বোদা থানায় গিয়ে চারজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন।

মামলার পর রাতেই রতনকে তার বাসা থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে; তার দেওয়া তথ্যে অপর তিন আসামিকেও গ্রেপ্তার করা হয় বলে তিনি জানান।

পরিদর্শক আবু সায়েম মিয়া জানান, ওই গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এই কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়েছে।