সদর উপজেলার কুপতলা ইউনিয়নের নলিগলির বিলে সোমবার উৎসব শুরু হয়। এ বছর এর আগে আর গাইবান্ধায় দলবেঁধে মাছ ধরার খবর পাওয়া যায়নি।
প্রতিবছর কার্তিক মাসে ‘বৈদ’ নামে গাইবান্ধার বিভিন্ন জলাশয়ে এই আয়োজন হয়। তবে ‘বৈদ’ শব্দটির অর্থ কেউ বলতে পারেনি।
নলিগলির বিলে মাছ ধরতে এসেছিলেন উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের তালুক মন্দুয়ার গ্রামের আব্দুল লতিফ।
৫৫ বছর বয়সী লতিফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনেককাল থেকেই এ অঞ্চলে ‘বৈদ’ নামে এই মাছ ধরার প্রথা চলে আসছে। জেলাজুড়ে রয়েছে শৌখিন এই মাছ শিকারির দল অর্থাৎ ‘বৈদ দল’।
তিনি বলেন, “বৈদের দলের একজন নেতা থাকে। যার কাছে থাকে মহিষের শিং দিয়ে তৈরি বড় একটি বাঁশিবিশেষ। যাকে বলা হয় বৈদের শিঙ্গা। যা দিয়ে উচ্চস্বরে শব্দ বের হয়। অনেক দূর থেকে তা শোনা যায়। নির্ধারিত স্থানে যথাসময়ে শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়া হয় বারবার।”
মাছ ধরার সরঞ্জামকে স্থানীয়ভাবে পলো, হ্যাঙ্গার জালি, পলো জালি, হ্যাগা, মুঠজাল, কোঁচা, ক্যাটা, তৌরা জাল, ঝাঁকি জাল ইত্যাদি বলা হয়।
ওই বিলে মাছ ধরতে আসা কুপতলা ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামের আজিজল মিয়া (৫০) বলেন, মাছ ধরা চলে দিনভর। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত। যে কেউ মাছ ধরতে পারে।
“বৈদের দল একযোগে সারিবদ্ধভাবে মাছ শিকারে নামে। একটি দলে মাছ শিকারীর সংখ্যা হাজারের বেশি হয় কখনও কখনও।”
সাধারণত বড় বড় বিল, খাল, জলাশয় ও ছোট নদীতে কার্তিক মাসে যখন পানি কম থাকে তখনি ‘বৈদ’ হয়।
এ্কই ইউনিয়নের পাঁচজুম্মা গ্রামের আইজল ইসলাম বলেন, “অনেকে অনেক মাছ পায়। আবার অনেকে একটিও পায় না। কিন্তু তাতে কারও মনে দুঃখ নেই। দল ধরে মাছ ধরতে যাওয়ার আনন্দটাই মুখ্য। মাছ পাওয়া বিষয় না।”