বছরখানেক আগে টাকা নিয়ে নলকূপ না বসানোয় ক্ষতিগ্রস্তরা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
সদর উপজেলার কাজুলিয়া ইউনিয়নের কাজুলিয়া গ্রামের আবুল সরদারের ছেলে জসিম সরদারেরর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন তারা।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিকুর রহমান খান বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।
অভিযোগে বলা হয়েছে, জসিম সরদার মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে নলকূপ বসিয়ে দেওয়া প্রতিশ্রুতি দিয়ে এলাকার ১৫০ ব্যক্তির কাছ থেকে গত বছরের প্রথম দিকে ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা করে প্রায় ২০ লাখ টাকা তোলেন। অথচ বছর পেরিয়ে গেলেও নলকূপ দেয়নি।
নলকূপ দেওয়া হবে কিনা খোঁজ নিতে গেলে গ্রামবাসীদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও হুমকি দিচ্ছেন জসিম সরদার।
কাজুলিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের স্ত্রী সেলিনা বেগম বলেন, “জসিম আমাগে কাছে আইশ্য কয়, আমার লগে উপজেলার চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাচ্চুরসহ আরো অনেক ন্যতার (নেতা) ভালো খাতির (ভালো সম্পর্ক) আছে। আমি যা কই (বলি) তাই করতে পারি। বাচ্চু ভাইরে ধইর্য এলাকায় ১০ জনরে ডিপকল (গভীর নলকূপ ) দিছি।
“আমার ধারে ডিপকল, ঘাটলা, চাউলের কার্ড কইর্যা দেয়া কোন ব্যাপার না। তোমাগো কিছু লাগলে আমারে কইয়ো।
“এসব শুইন্যা আমি তারে কইলাম আমাগে ৩ ড্যা (৩টি) ডিপকল দিতি পারো। আমার মাইয়্যা, ননদ ও আমার জন্নি একটা মোট তিনড্যার জন্নি ৪৫ আজার (হাজার) টাহা দিছি। তহন কইছিলো ১৫ দিনির মদ্দি দেবে।
“কয়দিন আগে আমি জসিমের বাড়ি টাহা চাতি গেছিলাম আমারে আমার বাপ-মা তুইলা গালাগালি করছে। আমাগে টাহাও দেয় না ডিপকলও দেয় না।”
কাজুলিয়া গ্রামের এসএম মুনজুর আলম বলেন, জসিমের সাথে উপজেলা চেয়াম্যানের ভালো সম্পর্কের বিষয়টি ইউনিয়নের অনেকেই জানেন। সেই সুযোগ নিয়ে জসিম এলাকায় বলে বেড়ায়, কাজুলিয়া ইউনিয়নে উপজেলা চেয়ারম্যান বাচ্চু ভাই একশতটি গভীর নলকূপ বরাদ্দ দিয়েছেন।
“নলকূপ বসাতে খরচের কথা বলে ১৫০ জনের কাছ থেকে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা করে প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জসিম।
“চেয়ারম্যানের কথা বলায় আমরা বিশ্বাস করে এতগুলি টাকা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছি।”
“কয়েকদিন আগে জসিমের বাবা আবুল হোসেনকে বলেছিলাম, জসিম যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে তাদের টাকা ফেরত দিতে। আমার কথা না রাখলে, আমার কী করার আছে?”
জসিমের সাথে বারবার যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে জসিমের বাবা আবুল হোসেন জানান, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ লুৎফার রহমান বাচ্চু আমার বাড়িতে অনেকবার এসেছেন।
“তার নাম করে আমার ছেলে এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছে। গত সপ্তাহে উপজেলা চেয়ারম্যান তার কার্যালয়ে আমাকে ডেকে পাঠান। আমি সেখানে গেলে তিনি আমাকে কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকলে তাদের সেই টাকা দিয়ে দিতে বলেন।
“আমরা টাকা ফেরত দিচ্ছি।”
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ লুৎফার রহমান বাচ্চু বলেন, জসিমের বাবাকে ডেকে টাকা ফেরত দিতে বলেছি। তারা ইতিমধ্যে কিছু লোকের টাকা ফেরত দিয়েছে বলেও আমাকে জানিয়েছে।