আলোচিত এই মামলা তদন্তের দায়িত্বে থাকা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক শেখ ওমর ফারুক বলেন, বড় ভাবি ‘ভর্ৎসনা করায়’ ক্ষুব্ধ হয়ে রাহানুর একাই এই হত্যাকাণ্ড ঘটান বলে স্বীকার করেছেন।
গত ১৪ অক্টোবর রাতে জেলার কলারোয়া উপজেলার খলসি গ্রামে মাছ ব্যবসায়ী শাহিনুর রহমান, তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করা হয়।
শাহিনুরের শাশুড়ি ময়না বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে সিআইডি মামলার তদন্তে নেমে শাহিনুরের ছোট ভাই রাহানুরকে গত বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করে। তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিআইডি কর্মকর্তারা।
জিজ্ঞাসাবাদে রাহানুর হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে ঘটনার আদ্যোপান্ত বলেছেন বলে জানান সিআইডির অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক ওমর ফারুক।
বুধবার বিকালে সাতক্ষীরা সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদে রাহানুর স্বীকার করেছেন, তিনি একাই একে একে চারজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন।”
জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, “স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর থেকে রাহানুর বড় ভাই শাহিনুরের বাড়িতে থাকছিলেন। রাহানুর বেকার থাকায় বড় ভাবি সাবিনা তাকে কথা শোনাতেন এবং বেকার থাকার কারণে ভর্ৎসনা করতেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন রাহানুর।
“কোমলপানীয়তে বেশি মাত্রায় ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন তিনি। এরপর রাহানুর নিজের ঘরে ফিরে যান। কয়েক ঘণ্টা পর কার্নিশ বেয়ে চিলেকোঠা দিয়ে ভাইয়ের ঘরে ঢোকেন তিনি। ঘরে ঢুকে প্রথমে ভাইকে এক কোপে হত্যা করেন। তারপর ভাবির পা বেঁধে উপুর্যপুরি কুপিয়ে হত্যা করেন। এরপর তাদের দুই সন্তানকে একইভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন।”
সিআইডি কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, রাহানুরের স্বীকারোক্তি মোতাবেক তাকে ঘটনাস্থলে নেওয়া হয়। সেখানে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বাড়ির পাশের পুকুর থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতি ও তোয়ালে উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি সাতক্ষীরার বিশেষ পুলিশ সুপার আনিচুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।