নারায়ণগঞ্জে নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি, বিক্ষোভ মিছিল

নৌযান শ্রমিক কর্মচারীদের খাদ্যভাতা নির্ধারণ করে চলতি বছরের মার্চ থেকে কার্যকর করাসহ বিভিন্ন দাবিতে নির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন নারায়ণগঞ্জের নৌযান শ্রমিকরা।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Oct 2020, 08:43 AM
Updated : 20 Oct 2020, 08:43 AM

মঙ্গলবার সকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের ৫ সম্বর ঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে কর্মবিরতির সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন ও বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা।
বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা হাবিবুর রহমান মাস্টার, আক্তার হোসেন, কবির হোসেন, মিরাজ, হাফেজ শাহাদাতসহ জেলা কমিটির নেতা-কর্মীরা।
এদিকে কর্মবিরতির কারণে শহরের ৫ নম্বর ঘাট, সিমেন্ট কারখানা ঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে পণ্যবাহী ও তেলবাহী নৌযান নোঙর করে রাখা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ থেকে চট্টগ্রাম, মংলা ও পায়রা বন্দরসহ বিভিন্ন স্থানে ১০ হাজারের বেশি নৌযান চলাচল করে। কর্মবিরতির কারণে সকাল থেকে কোন পণ্য ও তেলবাহী নৌযান চলাচল করেনি।

দেশের বিভিন্নস্থানে নৌযান শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগেও একই দাবিতে কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবুজ

শিকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর  ডটকমকে বলেন, দীর্ঘ সাড়ে ৬ মাসেও শ্রমিকদের খাদ্যভাতা দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। যখন শ্রমিকদের দাবি দাওয়া নিয়ে আন্দোলন হয় তখন আলোচনা করে সমাধান নামে আন্দোলন থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়া হয় নাই।শ্রমিকদের এসব দাবি নেমে নেওয়া না হলে আন্দোলন চলবে।

এ সময় তিনি সকল নৌযান শ্রমিককে ঐক্যবদ্ধভাবে দাবি আদায়ের আন্দোলনে শামিল হওয়ার আহবান জানান।

নৌযান শ্রমিকদের দাবিগুলোর অন্যতম হল- নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারীদের খাদ্যভাতা নির্ধারণ করে চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে কার্যকর করতে হবে। নৌ-আইন মেনে ডব্লিউটিসি সিরিয়াল অনুযায়ী সকল চট্টগ্রাম সমুদ্রগামী লাইটারেজ জাহাজ চলাচল করতে হবে।

মালিক কর্তৃক নিয়োগপত্র, সার্ভিসবুক দিতে হবে এবং কোন শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত করা চলবে না ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জাহাজ দুর্ঘটনায় পড়লে তার দায় মাস্টারদেরকে দেওয়া যাবেনা।

জাহাজে সকল শ্রমিকদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। নৌযানে কাগজপত্র দেখার নামে নৌ প্রশাসনের সকল হয়রানি নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা বন্ধ করতে হবে।

ইনল্যান্ড মাস্টার ড্রাইভারশীপ পরীক্ষায় ও ডিপিডিসি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সকল প্রকার অনিয়ম, দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে এবং কোর্স চলাকালীন সময়ে নৌযান থেকে শ্রমিকদের ছুটি বাধ্যতামূলক করতে হবে।

নৌযান শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য দাতব্য চিকিৎসালয় ও বিশ্রামাগার নির্মাণ করতে হবে। কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নৌযান শ্রমিক কর্মচারীদে ১২ লাখ টাকা মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

সরকার কর্তৃক কল্যাণ তহবিল অর্থ প্রাপ্তির বিষয়টি সহজপন্থ ব্যবস্থা করতে হবে। ভারতগামী নৌযান শ্রমিকদের লোকাল এজেন্টের মাধ্যমে ল্যান্ডিং পাশ, সার্ভিস ভিসা ও জাহাজে ফ্রিজিং ব্যবস্থা না থাকায় শ্রমিকদের সুবিধামতো স্থানে দৈনন্দিন বাজারঘাট করার জন্য পারাপারের নৌকার ব্যবস্থা করতে হবে।

বিভিন্ন পয়েন্টে নদীপথে ডাকাতি, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজী বন্ধ করতে হবে। নৌপথে ড্রেজিং ও পর্যাপ্ত বয়াবাতি স্থাপন করতে হবে।

আট ঘণ্টার বেশি কাজের জন্য ওভারটাইম হিসেব করে অতিরিক্ত অর্থ প্রদান এবং ঈদের আগে ও ১ মে শ্রমিক দিবসে নৌযান শ্রমিকদের ছুটি দিতে হবে।