বুধবার সকাল ৯টার দিকে আখালিয়াস্থ এলাকার নবাবী মসজিদের পঞ্চায়েতের কবরস্থানের কবর থেকে মরদেহটি উত্তোলন করা হয় বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই'র পরিদর্শক মাহিদুল হাসান।
তিনি জানান, আদালতের নির্দেশে সকাল ১১টার দিকে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সজিব আহমেদ ও মেজবাহ উদ্দিনের উপস্থিতিতে লাশটি তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান।
গত মঙ্গলবার সকালে রায়হান আহমদের মারা যাওয়া ঘটনায় তার স্ত্রীর করা মামলা পিবিআইতে স্থানান্তরের নির্দেশ দেয় পুলিশ সদর দপ্তর। পরে এদিন রাতেই মামলার নথি আনুষ্ঠানিকভাবে পিবিআইতে হস্তান্তর করে মহানগর পুলিশ।
বুধবার দুপুরে পিবিআইয়ের একটি দল সিলেটের বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ‘নির্যাতনে’ মারা যাওয়া রায়হানের মৃত্যুতে হওয়া হত্যা মামলার তদন্তে নামেন।
গত ১১ অক্টোবর ভোরে সিলেট নগরের আখালিয়ার এক যুবক রায়হান আহমদ (৩৩) নিহত হন। পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথমে প্রচার করা হয়, ছিনতাইয়ের দায়ে নগরের কাষ্টঘর এলাকায় দলবেঁধে পিটুনিতে নিহত হন রায়হান। তবে বিকালে পরিবারের বক্তব্য পাওয়ার পর ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয়।
নিহতের পরিবার দাবি করে, সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দর বাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে প্রাণ হারিয়েছেন রায়হান।
সেদিন রাত আড়াইটার দিকে পুলিশকে অভিযুক্ত করে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় আসামিদের অজ্ঞাত রেখে মামলা করেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি।
পরদিন রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (উত্তর) শাহরিয়ার আল মামুনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সিলেট মহানগর পুলিশ।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, কোতোয়ালি থানার সহকারী কমিশনার নির্মল চক্রবর্তী এবং বিমানবন্দর থানার সহকারী কমিশনার প্রবাস কুমার সিংহ।
এদিকে তদন্তে নেমে পুলিশ হেফাজতে রায়হান উদ্দিনের মৃত্যু এবং নির্যাতনের প্রাথমিক সত্যতা পায় এ তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটি জানতে পারে রোববার ভোর ৩টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে আনা হয়। সেখানে ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়ার নেতৃত্বেই তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়।
নির্যাতনে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে রায়হানকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সকাল ৭টার দিকে মারা যান তিনি।
নিহত রায়হান সিলেট মহানগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্টেডিয়াম মার্কেট এলাকায় এক চিকিৎসকের চেম্বারে সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।