প্রশাসনকে নিক্সনের হুমকি: বিচার চায় ফরিদপুর আওয়ামী লীগ

ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের গালি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর দোষী ব্যক্তির বিচার দাবি করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Oct 2020, 03:23 PM
Updated : 14 Oct 2020, 03:23 PM

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার প্রতি সহমর্মিতা ব্যক্ত করেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাংসদ নিক্সনের বিরুদ্ধে।

সাক্ষাৎকালে আওয়ামী লীগ নেতারা নিক্সনের মন্তব্যের নিন্দাও করেছেন।

তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানান।

জেলা প্রশাসক অতুল সরকার আওয়ামী লীগ নেতাদের সহমর্মিতার জবাবে তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, গত ১০ অক্টোবর চরভদ্রাসনে নির্বাচন চলাকালে এবং তারপর যেসব ঘটনা ঘটেছে তা ঊর্ধ্বতন মহলসহ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তিকে অবগত করা হয়েছে। এ বিষয়টি তারা দেখছেন। তাই এ বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য নেই।

তিরি বলেন, “আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমাকে রাজাকার বলা হয়েছে। আমার সম্পর্কে এমন একটি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে; তা আমার জন্য অমর্যাদাকর, যা আমি মেনে নিতে পারছি না।”

এই সময় জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা, সাধারণ সম্পাদ সৈয়দ মাসুদ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঝর্ণা হাসান, সদর উপজেলা সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম, জেলা দপ্তর সম্পাদক অনিমেষ রায়, সহ-দপ্তর সম্পাদক সোহেল রেজা, আইন বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ ব্যাপারী, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক দিপক মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গত শনিবার ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন হয়, যাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. কাওসার হোসেন নৌকা প্রতীক নিয়ে ১৬ হাজার ৫২৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কে এম ওবায়দুল বারী পান ৫ হাজার ৩৪৬ ভোট।

ভোটের পর সেদিন সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে স্বতন্ত্র সাংসদ নিক্সন চৌধুরী বলেন, “প্রশাসনের মধ্যে লুকাইয়া থাকা ওই জেলা প্রশাসক এ নির্বাচনে ১২ জন ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে নৌকার কর্মীদের অ্যারেস্ট করছে, পিটাইছে ওই জেলা প্রশাসক।”

এছাড়া, ভোটের দিন সকালেও সাংসদ নিক্সন চরভদ্রাসনের ইউএনওকে ফোন করে হুমকি-ধমকি দেন এবং অপর একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে ‘শুয়োরের বাচ্চা’ আখ্যায়িত করে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

তার ওই টেলিফোন আলাপের অডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে; এ ধরনের বক্তব্যের জন্য অনেকে ওই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাও এই সাংসদের বিরুদ্ধে মামলা করার কথা জানিয়েছেন।

তবে মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন মুজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সন। তার দাবি, হুমকি দেওয়ার যে অডিও ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে, তা ‘সুপার এডিটেড’।

আরও পড়ুন