নোয়াখালীতে সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিচার দাবি

নোয়াখালীতে বিবস্ত্র নারীকে নির্যাতনের ঘটনায় তথ্য সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও এতে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন-সমাবেশ হয়েছে।

নোয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2020, 11:32 AM
Updated : 13 Oct 2020, 11:32 AM

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা এ কর্মসূচি পালন করেন।

এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে শিক্ষক, মানবাধিকার ও নারী অধিকার কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিগণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।

সোমবার দুপুরে কয়েকজন সাংবাদিক একলাশপুরের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে সাংবাদ সংগ্রহে যান। তারা স্থানীয় ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হোসেন সোহাগের বাড়ি গেলে হামলার শিকার হন।

সোহাগের আত্মীয়-স্বজনরা এই হামলা চালান বলে সাংবাদিকদের অভিযোগ।

অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা সাংবাদিকদের মাইক্রোবাসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং নিউজ ২৪ এর ক্যামেরাম্যান মেহেদি হাসান ও চ্যানেল এস এর জেলা প্রতিনিধি ইমাম উদ্দিন সুমনকে মারধর করে। তারা সাংবাদিকদের একটি ক্যামেরা ও অন্য একটি ক্যামেরার মেমোরি কার্ডও ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আলমগীর ইউসুফ, সাংবাদিক সমিতির মহাসচিব মনিরুজ্জামান চৌধুরী, দৈনিক সচিত্র নোয়াখালী সম্পাদক আমিরুল ইসলাম হারুন, দৈনিক যায়যায়দিনের স্টাফ রিপোর্টার ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জেলা প্রতিনিধি আবু নাছের মঞ্জু, ডিবিসির জেলা প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান চৌধুরী কাজল, চ্যানেল ২৪ প্রতিনিধি সুমন ভৌমিক, দৈনিক নোয়াখালী বার্তা সম্পাদক অহিদ উদ্দিন মুকুল, দৈনিক ভোরের কাগজ প্রতিনিধি মোহাম্মদ সোহেল প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, একলাশপুরে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন মামলায় গ্রেপ্তার স্থানীয় ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হোসেন সোহাগের অনুসারীরা সোমবার দুপুরে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে নিউজ টোয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি আকবর হোসেন সোহাগ ও ক্যামেরাম্যান মেহোদি হাসানসহ আরও তিন সাংবাদিকের ওপর হামলা চালায়।

তারা সাংবাদিকদের একটি ক্যামেরা ও অন্য একটি ক্যামেরার মেমোরি কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলেও তারা অভিযোগ করেন।

এ ঘটনায় সাংবাদিক সোহাগ বেগমগঞ্জ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও ঘটনার সাথে জড়িতদের কাউকে গ্রেপ্তার বা ছিনিয়ে নেওয়া সরঞ্জাম উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

বক্তারা পেশাপগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি করেছেন।

গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ৩৫ বছর বয়সী ওই গৃহবধূর বাড়িতে ঢুকে একদল যুবক তাকে বিবস্ত্র করে শারীরিকভাবে নির্যাতন চালায় এবং তার ভিডিও ধারণ করে। একমাস পর ৪ অক্টোবর ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

এই ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে রোববার রাতে নয়জনের নাম উল্লেখ করে বেগমগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন।

আসামিরা হলেন- বাদল, মো. রহিম, আবুল কালাম, ইস্রাফিল হোসেন, সাজু, সামছুদ্দিন সুমন, আবদুর রব, আরিফ ও রহমত উল্যা। তাদের সবার বাড়ি বেগমগঞ্জে।

এছাড়া আদালতে ভুক্তভোগী নারীর দেওয়া জবানবন্দিতে মোজাম্মেল হোসেন সোহাগের নাম আসায় তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।