‘কিশোর গ্যাং’: নারায়ণগঞ্জে বাড়িতে হামলা করে এক নারীকে ছুরিকাঘাত

নারায়ণগঞ্জে বাড়িতে হামলা করে এক নারী পোশাক কর্মীকে ছুরিকাঘাত করার ঘটনা ঘটেছে।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2020, 05:35 AM
Updated : 13 Oct 2020, 05:35 AM

সদর উপজেলার ফতুল্লার শিহাচর শাহজাহান রোলিং মিল এলাকার এ হামলায় আহত নারীর দাবি তার ছোট বোনকে ধর্ষণে বাধা দেওয়ায় তাকে কুপিয়েছে কয়েকজন কিশোর। তবে বলছে ভিন্ন কথা।

মঙ্গলবার ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, গত রোববার রাতে শিহাচর শাহজাহান রোলিং মিল এলাকায় এক ভাড়াটিয়ার বাড়িতে এ হামলা হলেও ‘ধর্ষণ চেষ্টার’ কোনো কোনো প্রমান তারা পায়নি।

পূর্ব বিরোধের জেরে রবি ও সোমবার ওই বাড়িতে কয়েক দফা হামলা হয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, এসব ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এ ঘটনায় রোববার রাতেই থানায় জিডি করে লাবনীর পরিবার।

তবে আহত লাবনীর মা সেলিনা বেগম বলছেন, হামলাকারীরা রাজনৈতিক নেতাদের শেল্টারে চলে। তাদের ভয়ে এলাকার লোকজন চুপসে থাকে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হারেজ মিয়া ও তার স্ত্রী সেলিনা বেগম তিন মেয়ে এবং দুই ছেলে নিয়ে মনির মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তাদের মধ্যে বড় মেয়ে লাবনী এবং ছেলে খলিলের উপার্জনে তাদের সাতজনের সংসার চলে।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে আহত লাবনী জানান, রোববার রাত সাড়ে ৯টায় ওই দুই কিশোরসহ ১০ থেকে ১৫ জন কিশোর তাদের বাসায় আসে। তারা এলাকায় কিশোর অপরাধী হিসেবে পরিচিত।

“তারা যখন আমাদের বাসায় আসে তখন আমি গার্মেন্ট থেকে বাসায় এসেছি। কিশোররা এসে আমার ছোট বোনকে ধর্ষণের চেষ্টা করে।”

এ ঘটনায় ওই দিন রাতে ফতুল্লা মডেল থানায় জিডি করেন জানিয়ে তিনি বলেন, জিডি করার আসামিরা ওই দিন রাতে আবার আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়।

“প্রথমে জীবন আমার বোন লাকিকে জড়িয়ে ধরে খাটে ফেলে দেয়। তখন আমি চিৎকার করে জীবনকে ধাক্কা দিয়ে লাকিকে জড়িয়ে ধরি। এ সময় তারা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এরপর লাকিকে টেনে হিচড়ে ঘর থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

“তখন আবারও আমি তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে জীবন আমার পেটে কয়েকটি ছুরিকাঘাত করে দলবল নিয়ে চলে যায়।”

তার পরিবারের সদস্যরাসহ প্রকিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক আক্রান্ত স্থানে ১৮টি সেলাই করে। তাকে একদিন হাসপাতালে ভর্তি করে রাখেও বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, কিশোরদের ভয়ে থানায় গিয়ে তথ্য গোপন করে অভিযোগ না করে একটি জিডি করেছিলেন।

জিডির বিষয়টিও জানতে পেরে সোমবার রাতে কয়েক দফা তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে টিনের ঘর এবং দরজা জানালা কুপিয়ে জিডি উঠানোর হুমকি দেয় বলে অভিযোগ করছেন তিনি।