এই সময় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবুল কাশেমও হেনস্তার শিকার হন।
সোমবার দুপুরে জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হোসেন সোহাগের অনুসারীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সুধারাম ও বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও কাউকে গ্রেপ্তার করা বা ছিনিয়ে নেওয়া ক্যামেরা উদ্ধার করা যায়নি।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি হারুন অর রশিদ চৌধুরী জানান, হামলার শিকার নিউজ ২৪ ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের নোয়াখালী প্রতিনিধি আকবর হোসেন সোহাগ এই ঘটনায় বেগমগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছেন।
আকবর হোসেন সোহাগ বলেন, একলাশপুরে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের শিকার নারীকে টাকা দিয়ে ঘটনা মিটিয়ে ফেলার জন্য চাপ সৃষ্টি অভিযোগ উঠেছে সোহাগ মেম্বারের বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে তাদের বাড়ি গিয়েছিলেন তিনিসহ কয়েকজন সাংবাদিক।
তার অভিযোগ, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনিসহ আরও তিন সাংবাদিক জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে সাংবাদ সংগ্রহের কাজে যান। সাংবাদিকরা সোহাগ মেম্বারের বাড়ি গেলে তার আত্মীয় স্বজনরা সাংবাদিকদের ঘিরে ধরে নাজেহাল করেন।
“এরপর সাংবাদিকরা ওই বাড়ি থেকে ফেরার সময় পথে সোহাগ মেম্বারের সহযোগী মিঠু, জয়নাল, আজাদ, রাসেল ও বাবুলসহ একদল যুবক তাদের মাইক্রোবাসের গতিরোধ করে।”
আকবর হোসেন সোহাগ বলেন, হামলাকারীরা মাইক্রোবাসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং নিউজ ২৪ এর ক্যামেরাম্যান মেহেদি হাসান ও চ্যানেল এস এর জেলা প্রতিনিধি ইমাম উদ্দিন সুমনকে মারধর করে।
“এক পর্যায়ে তারা সাংবাদিকদের একটি ক্যামেরা ও অন্য একটি ক্যামেরার মেমোরি কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে যায়।”
খবর পেয়ে জেলা শহর থেকে ঘটনাস্থলে ছুটে যান মাই টিভির জেলা প্রতিনিধি আবুল হাছনাত বাবুল।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনা এতটাই নাজুক ছিল যে সেখান থেকে পুলিশ ও সাংবাদিকরা ফিরে আসাটাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। সোহাগ মেম্বারের অনুসারীরা আমাদের চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলেছিল।”
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবুল কাশেম জিএস বলেন, ঘটনার সময় তিনি জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে ছিলেন। সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় বাধা দিতে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকেও নানাভাবে হেনস্তা করে।
“হামলাকারীরা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেয় এবং গায়ে পরিহিত মুজিব কোট ধরে টানাহেঁচড়া করেছে।”
তিনি জানান, এ ঘটনায় সাংবাদিক আকবর হোসেন সোহাগ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনার সাথে জড়িতদের ধরতে এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
নারীকে বিবস্ত্র নির্যাতনের ঘটনায় ভুক্তভোগীর দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোজাম্মেল হোসেন সোহাগকে গত ৫ অক্টোবর গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দুই দিনের রিমান্ড শেষে গত ৮ অক্টোবর তিনি এই মামলায় আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
নির্যাতনের শিকার ওই নারী বাদী হয়ে রোববার রাতে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ৯ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করেছেন।
এছাড়া আদালতে ভুক্তভোগী নারীর দেওয়া জবানবন্দিতে সোহাগের নাম আসায় তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।