পিরোজপুর সদর থানার ওসি নুরুল ইসলাম বাদল, বৃহস্পতিবার দুই আসামি সিরাজ ও রানাকে পুলিশ অদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের হেফাজতে (রিমান্ড) নেওয়ার আবেদন করে। আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।
গ্রেপ্তার আসামি সিরাজ শেখ (৩৫) সদর উপজেলার গুয়াবাড়িয়ার ছত্তার শেখের ছেলে ও রানা শেখ (৩৪) সদর উপজেলার কুমারখালীর বাবুল শেখের ছেলে।
পিরোজপুর সদর থানার ওসি নুরুল ইসলাম বাদল জানান, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে চীনা নাগরিক ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর প্রধান টেকনিশিয়ান লাও ফান (৫৮) গুরুতর আহত হয়ে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় নির্মাণাধীন ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর প্রকৌশলী কাও চিয়েন হুয়া বাদী হয়ে রাতেই অজ্ঞাত আসামিদের নামে পিরোজপুর সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
রাতে পুলিশ, ডিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড যৌথ অভিযান চালিয়ে সিরাজ ও রানাকে গ্রেপ্তার করে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী পিরোজপুরে
দুপরে স্থানীয় সার্কিট হাউসে মন্ত্রী জেলা প্রশাসন, পুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড এবং বেকুটিয়ার কচা নদীতে নির্মাণাধীন ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর কর্মরত চীনের নাগরিকদের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীসহ উচ্চ পর্যায় থেকে পুরো বিষয়টি মনিটরিং করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই জোড়ালো সন্দেহভাজন দুই আসামিকে আটক করা হয়েছে। তাদের দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে চীনা নাগরিকদের আশ্বস্ত করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান জানান, বেকুটিয়ার কচা নদীতে নির্মাণাধীন ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুতে ৪১ জন চীনা নাগরিক কর্মরত আছে।
“সম্ভবত টাকা ছিনতাইয়ের জন্যই চীনা নাগরিক লাও ফানকে ছুরিকাগাত করে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ব্যাগ উদ্ধার করে, যার মধ্যে ৫১ হাজার টাকা পাওয়া গেছে।”
বিস্তরিত তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হবে বলে তিনি জানান।
এছাড়া সকালে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. শাফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নির্মাণাধীন ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর কুমিরমারা এলাকায় অবস্থিত চায়না ব্যারাক থেকে কর্মচারীদের বেতনের টাকা নিয়ে চীনা নাগরিক লাও ফান সেতুর নির্মাণ স্থানের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে তিনি আহত হন। স্থানীয়রা ও নির্মাণাধীন ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর কর্মকতারা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান; সেখানেই তিনি মারা যান।