‘স্থানীয় দলাদলির জেরে’ মাগুরায় কৃষককে কুপিয়ে হত্যা

মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায় ‘দলাদলির জেরে’ এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে।

মাগুরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2020, 12:04 PM
Updated : 6 Oct 2020, 12:04 PM

মঙ্গলবার সকালে উপজেলার দরিবিলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে বলে শ্রীপুর থানার ওসি আলী আহমেদ মাসুদ জানান।

তিন সন্তানের বাবা নিহত মশিউর রহমান (৪৫) কৃষিকাজ করতেন। তিনি দরিবিলা গ্রামের বাসিন্দা।

তিনি স্থানীয় দুই আওয়ামী লীগ নেতার দলাদলির একটি পক্ষের সমর্থক ছিলেন বলে পরিবারের ভাষ্য। 

মশিউরের পরিবারের বরাত দিয়ে ওসি আলী আহমেদ জানান, সকালে মশিউর রহমানকে এলাকার একটি চায়ের দোকানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষের লোকজন। মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মশিউরের স্ত্রী লতিফা বেগম বলেন, স্থানীয় রাজনৈতিক আধিপত্য নিয়ে শ্রীকোল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুতাসিম বিল্লাহ সংগ্রাম ও একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য শ্রীকোল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কুতুবুল্লাহ কুটির সমর্থকদের বিরোধ দীর্ঘদিনের। এই দুই নেতার সমর্থনে দরিবিলা গ্রামে দুটি সামাজিক দলের সৃষ্টি হয়েছে।

মশিউর রহমান শ্রীকোল ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান মুতাসিম বিল্লাহ সংগ্রাম সমর্থিত অংশের লোক বলে লতিফা বেগম জানান।

লতিফা বলেন, সম্প্রতি একটি মেয়েঘটিত ঘটনায় মশিউর রহমানের মামাতো ভাই ডলার মিয়ার সঙ্গে প্রতিপক্ষ দলের এক সমর্থকের বাকবিতণ্ডা হয়, যা নিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

“সকালে মশিউরকে এলাকার একটি চায়ের দোকানে একা পেয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষের লোক আয়ুব, জামান, তুহিন, আসলাম, জাহাঙ্গীর, লিমনসহ কয়েকজন।”

জেলা ১১টার দিকে মাগুরা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, স্বামীর মৃতদেহের অদূরে বুক চাপড়ে কাদঁছেন মশিউরের স্ত্রী লতিফা বেগম।

লতিফা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমার ছেলে-মেয়েরা চিংড়ি খেতে পছন্দ করে। তাই সকালে চিংড়ি কিনে বাড়ি দিয়ে পাশের চা দোকানে যায় আমার স্বামী। সেখানে একা পেয়ে কুপিয়ে তাকে খুন করে তাকে।

“আমি খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে হামলাকারী আয়ুব, জামান, তুহিনসহ অন্যদের হাতে-পায়ে ধরে কাকুতি মিনতি করলাম। কিন্তু তারা শোনেনি। আমার চোখের সামনে তারা চাইনিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমার স্বামীরে খুন করল। আমি এখন আমার তিন সন্তান নিয়ে কীভাবে বাঁচব?”

ওসি আলী আহমেদ মাসুদ বলেন, হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্যে মর্গে পাঠানো হয়েছে।