এ বছর গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী হর্টিকালচার সেন্টারে এ জাতের আম গাছে এরই মধ্যে আম পেকেছে।
‘মেহেদী ২’ নামের নাবি জাতের এ আম গাছে বছরে দুইবার আম ধরে। ‘এপ্রিল মাসে গাছে মুকুল আসে আর আম পাকে অক্টোবরে। আবার নভেম্বরে এসব গাছে মুকুল ধরে মার্চে ফলন হয়।’
দেশের মানুষের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এজন্য ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প’ নেওয়া হয়েছে।
এ বছর পাকা পাঁচশ গ্রাম ওজনের একেকটি আম পাওয়ার কথা জানিয়ে কাশিয়ানী হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, “এ বছর এপ্রিল মাসে গাছে ফুল আসে। এ ফুল থেকে গাছে ছয়টি আম ধরে। আক্টোবরে শুরুতেই এ আম পেকেছে।”
কৃষিবীদ আমিনুল ইসলাম জানান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পের পরিচালক ড. মেহেদী মাসুদ দেড় বছর আগে ইন্দোনেশিয়া থেকে এই জাতের আমের একটি ডাল এনে আমিনুলকে দেন। সেটা থেকে কলম করে কাশিয়ানী হর্টি কালচারে রোপন করেন তিনি।
“এ আমে রোগ বালই ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ নেই।”
মেহেদী-২ আম কেমন
বাংলাদেশের আবহাওয়া উপযোগী এ আম আকারে বড়। প্রতিটি আমের ওজন হয়েছে ৫শ’ গ্রাম। আমে আঁশ নেই, আঁটি ছোট। চিনির পরিমাণ ২২ ভাগ।
সু-ঘ্রাণসহ এ আমের ভেতরটা রঙিন। আমের ৮৮ ভাগই খাওয়ার উপযোগী। খেতেও সুস্বাদু বলেন এ কৃষিবিদ।
বাণিজ্যিক সম্ভাবনা কতটা
কাশিয়ানী হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক আমিনুল বলেন, পাঁচ বছর বয়সী এ জাতের একটি আম গাছ থেকে বছরে দুই থেকে তিন মণ আম পাওয়া সম্ভব।
“দেশে প্রচলিত আমের তুলনায় এ জাতের আম অনেক বেশি ফলন দিতে সক্ষম।”
তারা মনে করছেন, দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর পুষ্টির চাহিদা পুরণে এ আম বিপুল ভূমিকা রাখবে।
কাশিয়ানী হর্টিকালচারের কর্মকাণ্ড
এ হর্টি কালচার সেন্টারে আমসহ ফলের চারা উৎপাদনের করে গোপালগঞ্জসহ আশপাশের জেলায় সরবরাহ করে থাকে।
এছাড়া সারা দেশে মেহেদী-১, মেহেদী-২, কার্টিমন, গৌড়মতি, তাইওয়ান গ্রিন, ব্যানানা, তোতাপরি, সূয্যডিম,বারি-৪, হাড়িভাঙ্গা, সুরমাই ফজলি, হিমসাগর আমের চাষ ছড়িয়ে দিতে কাজ করছেন এখানকার কৃষিবিদরা।
কৃষিবীদ আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে কৃষকদের দিয়ে গোপালগঞ্জ জেলায় বেশ কয়েকটি উচ্চফলনশীল উন্নতজাতের আমের প্রদর্শনী প্লট করিয়েছি। এখানে আম উৎপাদন শুরু হয়েছে।
“এ বছর কাশিয়ানী হর্টি কালচার সেন্টারে দেশি আম বীজ থেকে এক লাখ রুটস্টক করেছি। এসব রুটস্টকের মাথায় গ্রাফটিং করে উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাতের আমের চারা উৎপাদন করছি।”
এসব চারা সরকার নির্ধারিত সূলভ দামে বিক্রি করা হয় এই সেন্টার থেকে। সৌখিন ও বাণিজ্যিক চাষে যুক্ত কৃষকরা এখান থেকে চারা সংগ্রহ করে থাকে।