চিনিকলে বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসানোর প্রস্তাব এসেছে: পঞ্চগড়ে শিল্পমন্ত্রী

দেশের চিনিকলগুলোর অব্যহৃত জমিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তাব হাতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন।

পঞ্চগড় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Oct 2020, 12:54 PM
Updated : 1 Oct 2020, 02:18 PM

বৃহস্পতিবার বিকালে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়নে সারের নতুন বাফার গুদাম উদ্বোধন করতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, চিনিকলগুলোতে বিশাল সম্পদ রয়েছে। সেগুলো কাজে লাগাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে।

চিনিকলের অব্যহৃত জায়গায় পাওয়ার প্লান্টসহ বিভিন্ন কৃষিভিত্তিক কারখানা করার প্রস্তাবনা আসছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেন তিনি।

তবে এসব চিনিকল বন্ধ করার এবং শ্রমিক ছাটাই করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নাই বলেও জানিয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, বরং চিনিকলগুলো আধুনিকায়ন করে সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বেশি সময় চালু এবং বিকল্প আয়ের কর্মসংস্থানের জন্য নতুন শিল্প স্থাপন করা হবে।

ময়দানদীঘি ইউনিয়নের ধনিপাড়ায় প্রায় ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ হাজার মেট্রিক টন সার ধারণ ক্ষমতার এ বাফার গুদাম উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি বলেন, “সরকার কর্মসংস্থান সংকুচিত নয়, নতুন কৃষিভিত্তিক শিল্প কারখানা গড়ে তুলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে।”

এদিকে,দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলোয় চিনির মজুদ পড়ে থাকলেও শ্রমিকদের বেতন এবং আখচাষিদের পাওনা বকেয়া রয়েছে।

চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের কর্মকর্তাদের ভাষ্য, বাজারে ভারসাম্য রাখতে সরকার কিছু চিনি মজুদ রাখে। দেশের ১৫ লাখ মেট্রিক টনের মতো চিনির বার্ষিক চাহিদার বিপরীতে এসব কলে প্রায় এক লাখ টন চিনি উৎপাদন হয়ে থাকে; বাকিটা আমদানি করা হয়। এদিকে,চলতি আর দায়-দেনা মেটাতে সরকারের কাছে ৮৫০ কোটি টাকার অনুদান চেয়েছে এই করপোরেশন।

অবশেষে ইউরিয়া সারের গুদাম হল

সরকারি হিসেবে দেশে ইউরিয়া সারের বাৎসরিক চাহিদা অন্তত ২৫ লাখ মেট্রিক টন; এর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ আমদানি করা হয়।

তবে সারের নিরাপদ মজুদের জন্য ২৫ লাখ মেট্রিক টনের অতিরিক্ত পাঁচ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার বাফার গোডাউনগুলোয় মজুদ রাখা প্রয়োজন বলে বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাসট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) বলছে।

বর্তমানে দেশের কারখানা ও বাফার গুদামের ধারণ ক্ষমতা তিন লাখ মেট্রিক টন। সেজন্য এক লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার নতুন ১৩টি বাফার গুদাম নির্মাণ করছে সরকার।

পঞ্চগড়ে এ অনুষ্ঠানে বিসিআইসি-এর চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য বিভিন্ন জেলায় ১৩টি নতুন বাফার গোডাউন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় প্রথম এ গোডাউন উদ্বোধন করা হল।

“ভরা মৌসুমে সারের মজুদ বৃদ্ধি, সুষ্ঠুভাবে সার সংরক্ষণ, বিতরণ এবং ডিলারের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের মাঝে সার পৌঁছানো এ প্রকল্পের লক্ষ্য।”

অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, “সরকার মানুষের প্রয়োজনকে যে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় নতুন বাফার গোডাউন তারই প্রমাণ। এটা এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল।”

তবে নন-ইউরিয়া সারের গুদাম স্থাপনের দাবির বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রী জানান, এটা শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় নয়। এজন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।