আশুগঞ্জে ব্যাংকের নৈশপ্রহরী খুন: চারজনকে গ্রেপ্তার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের (বিডিবিএল)

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2020, 11:23 AM
Updated : 30 Sept 2020, 11:23 AM

নৈশপ্রহরীকে খুন করে ব্যাংক লুটের চেষ্টার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার পুলিশ।

বুধবার বেলা ১১টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসপি মোহাম্মদ আনিসুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

এরআগে গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে আশুগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার হয়।

গ্রেফতাররা হলেন, আশুগঞ্জ উপজেলার বগৈর এলাকার রসু মিয়ার ছেলে জামাল হোসেন (২৪), আড়াইসিধা গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে মো. জামিল (২৮) ও রহিম বাদশার ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২৭) এবং চরচারতলা গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মাসুম কবির (৩৮)।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে আশুগঞ্জ গোলচত্বর সংলগ্ন বিডিবিএল শাখা ভবনের ভেতর থেকে নৈশপ্রহরী রাজেশ বিশ্বাসের (২৩) রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত রাজেশ সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার চান্দপুর গ্রামের ক্ষিরোদ বিশ্বাসের ছেলে।

এসপি আনিসুর রহমান বলেন, “লোহার রেঞ্জ ও শবাল দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করে রাজেশকে হত্যা করা হয়।”

ব্যাংক লুটের উদ্দেশ্যেই এ হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে তিনি জানান, হত্যকাণ্ডের ‘মূল হোতা’ জামাল হোসেন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

সেদিনের ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকতরা ‘বড় কাজ’ করার জন্য ব্যাংক লুটের পরিকল্পনা করেছিল। সেজন্য বিডিবিএল ও সোনালী ব্যাংক এবং প্রিমিয়ার ব্যাংকের আশুগঞ্জ শাখায় লুট করার জন্য খোঁজ-খবর নিতে থাকে।

কিন্তু সোনালী ব্যাংকটি বাজারে হওয়ায় এবং সব সময় লোকজনের আনাগোনা থাকায় সেখানে লুটের পরিকল্পনা বাদ দেওয়া হয়। প্রিমিয়ার ব্যাংকের চারদিকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা থাকায় সেখানেও লুটের পরিকল্পনা ভেস্তে যায় তাদের।

বিডিবিএল ব্যাংকের একটি অরক্ষিত জানালা এবং পেছন দিকে চলাচলের ব্যবস্থা থাকায় সেখানে লুটের পরিকল্পনা করে।

ঘটনার দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী জামাল ও জামিল জানালার গ্রিল কাটে। মোস্তাক ও শাহাদাৎ নামে দুইজন রাস্তায় পাহারা দেয় এবং লোকজনের গতিবিধি লক্ষ্য রাখে।

জামাল ও জামিল ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করে নৈশপ্রহরী রাজেশকে লোহার রেঞ্জ ও শাবল দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করে হত্যা করে।

এরপর তারা ব্যবস্থাপকের কক্ষে গিয়ে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এবং একটি ল্যাপটপ ও নগদ পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে যায়।

পরবর্তীতে টাকা লুটের জন্য ব্যাংকের ভল্ট ভাঙার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় তারা।

এরপর পুলিশের তৎপরতার কথা বলতে গিয়ে এসপি আনিসুর রহমান জানান, ক্রাইম সিন পর্যালোচনা করে ঘটনার সাথে জড়িত চারজনকে শনাক্ত করা হয়। গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত ল্যাপটপ ও টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

ব্যাংকের ভল্টের খোয়া যাওয়া দুইটি চাবি উদ্ধার এবং অভিযুক্ত বাকি দুইজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. রইছ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর দপ্তর) আবু সাঈদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) মকবুল হোসেন, জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আলাউদ্দিন চৌধুরী, সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) আনিসুর রহমান ও ডিআইও-১ ইমতিয়াজ আহাম্মদ এবং আশুগঞ্জ থানার ওসি জাবেদ মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।