করতোয়ার ‘বাঁধ ধসে গাইবান্ধার ১৪ গ্রামের বাসিন্দা’ পানিবন্দি

টানা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ এবং উজানের ঢলে করতোয়া, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, তিস্তা ও ঘাঘটসহ গাইবান্ধার সব নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2020, 02:30 PM
Updated : 29 Sept 2020, 02:30 PM

মঙ্গলবার করতোয়া নদীর পানি বিপদসীমার ৮১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

এ তথ্য জানিয়ে গাইাবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে ।

এতে গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ী উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকার কলা, আখ ও রোপা আমনসহ বিভিন্ন শাক-সবজিক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। অসময়ে আকস্মিক এ বন্যায় কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়েছে।

পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান আগের রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের টোংড়ারদহ এলাকায় করতোয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় ৩০ মিটার অংশ ধসে পড়ায় আকস্মিকভাবে ১৪টি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “এতে ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।”

বন্যায় প্রায় এক হাজার হেক্টর আমন ধানক্ষেত, ৮৫ হেক্টর শাকসবজি এবং ৫ হেক্টর পানের বরজ পানিতে তলিয়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের কাজ চলছে।

তবে এ বাঁধ ধসে খবর পাননি বলে জানিয়েছেন গাইাবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান। 

মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা যায়, পলাশবাড়ীর কিশোরগাড়ী ও হোসেনপুর ইউনিয়নের বেশকিছু এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় লোকজন দুর্ভোগের মুখে পড়েছে। গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর ভায়া ঘোড়াঘাট আঞ্চলিক মহাসড়কসহ রাস্তাঘাটে পানি ওঠায় যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বেশ কিছু এলাকায় অপরদিকে বন্যার পানি ঢুকেছে।

পলাশবাড়ীর কিশোরগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম রিন্টু জানান, টোংড়ারদহ এলাকায় বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় তার ইউনিয়নের কিশোরগাড়ী, বড় শিমুলতলা, কাশিয়াবাড়ী, চকবালা, সগুনা ও কেশবপুর গ্রামসহ ১৪টি প্লাবিত হয়েছে।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) জহিরুল ইসলাম জানান, করতোয়া নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দরবস্ত, শিবপুর, সাপমারা, নাকাই, কাটাবাড়ি, ফুলবাড়ি, হরিরামপুর, মহিমাগঞ্জ, রাখালবুরুজ ও তালুকানুপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। ডুবে গেছে হাজার হাজার একর ফসলি জমি।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ বর্মন জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে সাহায্য সহযোগিতার জন্য জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে।