এ কয়েকদিনের অতি বর্ষণে জেলার সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। করতোয়া নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদী ভাঙন ও মাটির ঘর ধসে শত শত পরিবার ভিটেমাটি হারানোর খবর পাওয়া গেছে। বিস্তৃর্ণ এলাকার ফসলের মাঠ ডুবে যাওয়ার পাশাপাশি ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।
“তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে।”
গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাকছুদুর রহমান বলেন, দুই-এক দিনের মধ্যে এই পানি নেমে গেলে আমন ধানের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। তবে পানিতে দেরিতে নামলে ক্ষয়ক্ষতি বাড়বে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বলছে, তিন দফা বন্যার পর জেলায় চলতি বছর এক লাখ ২৮ হাজার ৫০ হেক্টর (৯ লাখ ৬০ হাজার ৩৭৫ বিঘা) জমিতে আমন ধান রোপন করা হয়। তারমধ্যে গত কয়েকদিনের অবিরাম বর্ষণে ৩ হাজার ৮৬০ হেক্টর (২৮ হাজার ৯৫০ বিঘা) জমির আমন ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে।
সাদুল্লাপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ছান্দিয়াপুর বসনিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক সামিয়ুর রহমান বলেন, “এর আগে পরপর তিন বার বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
“এরপরও ধার-দেনা করে জমিতে রোপা আমন চাষ করেছি। এখন চতুর্থ বারের মতো আমাদের জমি পানিতে ডুবে গেছে।”
একই গ্রামের তোতা মিয়া বলেন, “বন্যার ক্ষয়ক্ষতি এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি। চতুর্থ বারের মতো আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।
সাঘাটা উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের মানিকগঞ্জ গ্রামের কৃষক আবুল ওয়াজেদ আলী জানান, আবারো বৃষ্টির পানিতে তলে গেছে তার আমন ধান।
“আমরা এখন কী খাব? কেউ তো আমাদের খোঁজ নেয় না।”
বাড়তে থাকা এই পানিতে আরও ফসল তলিয়ে যেতে পারে শঙ্কা করছেন তিনি।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বর্ষণে জেলার ২৫০টি পুকুরের প্রায় ৩২ মেট্রিক টন মাছ ভেসে গেছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৪০ লাখ টাকা।
ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আবারো পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু গত কয়েক দিনের বৃষ্টির পানিতে সেই মাছও আবারো ভেসে গেছে।
গাইবান্ধা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুদ দাইয়ান জানান, ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষিরা যাতে সরকারি সাহায্য পান সেজন্য মাছ চাষিদের ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।