খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি তরুণীকে দলবেঁধে ধর্ষণ: সাতজন গ্রেপ্তার

খাগড়াছড়িতে এক পাহাড়ি পরিবারের বাড়িতে ঢুকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Sept 2020, 07:44 AM
Updated : 27 Sept 2020, 07:44 AM

দেশজুড়ে আলোচিত এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামিদের রোববার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তাদের আগের দিন খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারর হলেন, মো. আমিন (৪০), বেলাল হোসেন (২৩), ইকবাল হোসেন (২১), আব্দুল হালিম (২৮), শাহিন মিয়া (১৯), অন্তর (২০) ও আব্দুর রশিদ (৩৭)। এরা খাগড়াছড়ির রামগড়, গুইমারা, মাটিরাঙ্গা ও খাগড়াছড়ি সদরের বাসিন্দা।

গত বুধবার মধ্যরাতে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের বলপাইয়া আদাম গ্রামে এক পাহাড়ি পরিবারের বাড়িতে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণীকে (২৬) দলবেঁধে ধর্ষণ এবং ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের শিকার ওই নারী সেই পরিবারের একমাত্র কন্যা সন্তান।

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা নিয়ে রোববার সকালে খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন ও খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো. আব্দুল আজিজ এসব তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার জানান, ব্যাপক অভিযান চালিয়ে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন এলাকাসহ চট্টগ্রাম থেকে ওই ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে সোনা বিক্রির ও লুট করা টাকা, মোবাইল ফোনসেট এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানানা তিনি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, “এর সাথে রাজনৈতিক কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। অপরাধীদের পরিচয় অপরাধীই।”

আদামের এ ঘটনায় নয়জন পেশাদার ডাকাত অংশ নেয়। ডাকাতি ও একই সাথে ধর্ষণই তাদের উদ্দেশ্যে ছিল বলেন খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আব্দুল আজিজ।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনার শিকার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণীটিকে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ওই দিন বিকালেই খাগড়াছড়ি সদর থানায় ওই তরুণীর মা নারী ও শিশু নির্যাতন আইন এবং ডাকাতি ও দস্যুতার আইনে দুইটি এজাহার দাখিল করেন। এজাহারে তার মেয়ের বয়স ২৬ বছর দেখানো হয়েছে।

এদিকে, কিছুটা সুস্থতা বোধ করায় শনিবার বিকালে তরুণীকে খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. পূর্ণ জীবন চাকমা জানান, ওই নারীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। চিকিৎসায় সুস্থ বোধ করায় তাকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

দ্রুত ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যেতে পারে বলেন তিনি।

সেদিন বিকালে হাসপাতাল থেকে বোরোনোর পর শনিবার বিকালেই খাগড়াছড়ির আমলী আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোরশেদ আলমের আদালতে ধর্ষণের শিকার তরণী ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। এরপর তার মায়ের জিম্মায় তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রতিবাদে ফেটে পড়ে।

এর প্রতিবাদে বাংলাদেশ ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরাম ও মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিল যৌথভাবে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় ও খাগড়াছড়ি জেলা নেতারা নারী ধর্ষণ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।