তিস্তা নিয়ে চীনের সাথে আলাপ চলছে: পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী

শুষ্ক মৌসুমে পানি ‘সঙ্কটে’ ভোগা তিস্তা নদী পুনরুদ্ধারে চীনের সঙ্গেও আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Sept 2020, 03:24 PM
Updated : 25 Sept 2020, 03:24 PM

কুড়িগ্রামে পাঁচ দফা বন্যার পর শুক্রবার বিকালে বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদীর ভাঙন এলাকা দেখতে গিয়ে এ বিষয়ে তিনি কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “২১টি প্রকল্প নিয়ে ডোনার কান্ট্রির (লগ্নিকারী দেশ) সাথে কথা বলেছি। এর মধ্যে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীন আগ্রহ দেখিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।”

দশ বছর আগেও দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ‘ভালো ছিল না’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছি। এখন সরকারের টাকার কোনো সমস্যা নেই।”

তবে রাতারাতি নদী ভাঙন রোধ করা সম্ভব নয় জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে ‘টেকনিক্যাল কমিটিসহ বিশেষজ্ঞদের’ পরামর্শ নিয়ে কাজ করতে সময় প্রয়োজন হয়। তাই কুড়িগ্রামবাসীকে ধৈর্য্য ধরতে হবে।

প্রায় এক দশক আগে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় বহু প্রতীক্ষিত তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হওয়ার কথা থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতায় তা আটকে যায়।

নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি সরকার ভারতের ক্ষমতায় আসার পর তিস্তা চুক্তি নিয়ে আশার কথা কথা শোনা গেলেও মমতার মত বদলায়নি। 

এই প্রেক্ষাপটে তিস্তার তীর ব্যবস্থাপনা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং শুকনো মৌসুমে পানি সঙ্কট দূর করতে সরকার 'তিস্তা রিভার কমপ্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যন্ড রেস্টোরেশন' শীর্ষক একটি প্রকল্পের পরিকল্পনা করেছে, যেখানে আট হাজার কোটি টাকার মতো ব্যয় হতে পারে বলে খবর এসেছে সংবাদমাধ্যমে। এই প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়েই আগ্রহী চীন।

শুক্রবার কুড়িগ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক উত্তরবঙ্গের নদ-নদী ভাঙন রোধে ড্রেজিং ও বাঁধ নির্মাণসহ অন্যান্য প্রকল্পের কথাও বলেন।

তিনি জানান, এর মধ্যে ১৩৭৬ কোটি টাকা তিনটি প্রকল্প চলমান। ৭১৪ কোটি ও ৩৮৩ কোটি টাকার আরো দুটি প্রকল্প রয়েছে।

“কুড়িগ্রাম-গাইবান্ধায় বন্যার পানি নেমে এসে যে ক্ষতি করছে এটাকে রক্ষা করতে প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। নদী ড্রেজিং-এ বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন চলছে। এগুলো শেষ হলে মানুষ রক্ষা পাবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিদের্শনা অনুযায়ী কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এ অঞ্চলের বন্যার সমস্যা অতীতেও ছিল, এখনও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। উজানে যখন বৃষ্টি হয় তখন পানি এ অঞ্চল দিয়ে নেমে বঙ্গপোসাগরে যায়। ভাটির দেশ হিসেবে সব সময় এটা আমাদেরকে ফেইস করতে হয়।”

পরিদর্শনকালে প্রতিমন্ত্রী সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়ের বন্যা কবলিতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। পরে মোগলবাসা, চিলমারী রমনা এবং উলিপুর উপজেলার অনন্তপুর, গুনাইগাছ টি-বাঁধের ভাঙন এলাকা ঘুরে দেখেন।