কুড়িগ্রামের খাদ্যগুদামে ৬ লাখ ছেঁড়া-ফাঁটা  বস্তা সরবরাহ

কুড়িগ্রামে সরকারি ধান-চাল সংরক্ষণের জন্য অন্তত ছয় লাখ ছেঁড়া-ফাঁটা  বস্তা সরবরাহ করায় ঘটনা তদন্তে দুটি কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2020, 06:17 PM
Updated : 24 Sept 2020, 06:17 PM

সদর উপজেলা এলএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা ও ফুলবাড়ি উপজেলা এলএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হামিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যেই এক লাখ ছেঁড়া-ফাঁটা  বস্তা ফেরতও পাঠিয়েছে জেলা খাদ্য বিভাগ।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিজানুর রহমান বলেন, “ঢাকার কেন্দ্রীয় খাদ্য বিভাগ টেন্ডারের মাধ্যমে বস্তা সরবরাহ করে। সম্প্রতি কুড়িগ্রামে আট লাখ বস্তা সরবরাহ করেছে তারা। এর মধ্যে সদর উপজেলা এলএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা পাঁচ লাখ আর ফুলবাড়ী উপজেলা এলএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হামিদুল ইসলাম এক লাখ বস্তা গ্রহণ করে শত ভাগ ভাল বলে প্রত্যয়ন দেন।

“বস্তা গ্রহণ করার এখতিয়ার উপজেলা পর্যায়ের এলএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করতে গিয়ে অনিয়মের সত্যতা মেলে।”

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখতে ইতোমধ্যে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির গত ২ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও এখনও দেয়নি। তবে মৌখিকভাবে তারা অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

“লিখিত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অফিশিয়ালি জানানো হবে। তবে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া মাত্রই ঢাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে টেলিফোনে জানিছি। ফলে বস্তা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বিল আটকে গেছে। সরকারের সঙ্গে চুক্তির শর্ত মোতাবেক ত্রুটিপূর্ণ বস্তা তুলে নিয়ে নতুন বস্তা সরবরাহ করতে বাধ্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ঢাকার হেড অফিসের। আমাদের কাজ সঠিক বস্তা বুঝে নেওয়া।”

খাদ্য পরিদর্শক পদমর্যাদার একজন তদন্ত কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাইরে থেকে পুরনো বস্তা কিনে নতুন বলে চালিয়ে দিয়েছে।”

খাদ্য বিভাগের আরেকজন কর্মকর্তার দাবি, উৎকোচ নিয়ে ছেঁড়াফাটা বস্তা গ্রহণ করেছেন এলএসডি কর্মকর্তারা।

ফুলবাড়ি উপজেলা এলএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হামিদুল ইসলাম বস্তা ছেঁড়াফাঁটা ও নিম্নমানের হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

তিনি বলেন, “আমার গ্রহণকৃত প্রায় এক লাখ নিম্নমানের বস্তার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে রয়েছে।”

তবে তিনি কেন ছেঁড়াফাটা বস্তা গ্রহণ করেছেন এমন প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর দেননি।

আর সদর উপজেলা এলএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি।

তিনি বলেন, “এ বিষয়ে কথা বলব না। জেলা খাদ্য কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে।”