ফরিদপুরে চোখ বাঁধা যুবলীগ নেতা আর পুলিশ কর্মকর্তার ভিডিও ফেইসবুকে

চোখ বাঁধা অবস্থায় ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ আরাফাত আর আহাদুজ্জামান নামে পুলিশের এক পরিদর্শকের কথোপকথনের ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2020, 07:06 PM
Updated : 23 Sept 2020, 07:06 PM

জেলার পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান জানান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) জামাল পাশাকে আহ্বায়ক করে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ এই কমিটি গঠন করে।

কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম ও ভাঙ্গা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজী রবিউল ইসলাম।

ভিডিওটি যুবলীগ নেতা আরাফাত সোমবার ফেইসবুকে আপলোড করেন বলে তিনি নিজে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

ভিডিওতে দেখা গেছে, জিনসের প্যান্ট ও কোট পরা এক ব্যক্তির হাতে হাতকড়া। দুই চোখ গামছা দিয়ে বাঁধা। তার সামনে চেয়ারে বসা এক ব্যক্তি বলছেন, ‘তোর কী হইছে? কে মারছে? আমি তো তোগে লোক না। তোগে লোক হলে থানায় থাকতে পারতাম। আমি এমপি নিক্সন চৌধুরীর লোক।’

আরাফাতের দাবি চোখ বাঁধা ওই ব্যক্তি তিনি। আর চেয়ারে বসা ব্যক্তি পরিদর্শক আহাদুজ্জামান।

আরাফাত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় কাউলিবেড়া এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

“হাতকড়া পরিয়ে গাড়ির মধ্যে চারজন পুলিশ সদস্য আমাকে মারধর করেন। পুখরিয়া এলাকায় আমাকে ডিবি পুলিশের গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়। তখন আমার চোখ বেঁধে ফেলা হয়। নানাভাবে ভয় দেখানো হয়। বলা হয়, ‘তোকে ক্রসফায়ারে দেব। সকালের সূর্য তুই দেখতে পারবি না। আজই তোর শেষ রাত।’

“পরে আমাকে চেয়ারে পিছমোড়া করে বাঁধা হয়। এরপর আমার দুই পায়ে বেতের লাঠি দিয়ে অন্তত ৩০ মিনিট পেটানো হয়। ১০ মিনিট বিরতি দিয়ে আবার পেটানো হয়। পরে সেখানে আসেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন ওসি আহাদুজ্জামান।”

সেই ঘটনার ভিডিও আপলোড করেছেন বলে আরাফাতের দাবি। তবে ভিডিওটি কে করেছে বা কোথায় তিনি পেয়েছেন সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি আরাফাত।

আহাদুজ্জামান ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের ১২ মার্চ পর্যন্ত জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ছিলেন। পরে তাকে সদরপুর উপজেলার চন্দ্রপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হিসেবে বদলি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন।

তিনি  সাংবাদিকদের বলেন, “আমি আরাফাতকে চোখ বাঁধা অবস্থায় পেয়েছি। তাকে মারধর করা হয়েছে কিনা জানি না। এর আগে আরাফাত আমাকে বলেছিলেন, আমি নাকি এমপি নিক্সন চৌধুরীর লোক। এর উত্তরে আমি বলেছি, ‘নিক্সন চৌধুরীর লোক হলে আমি থানাতেই থাকতে পারতাম’।”

এ বিষয়ে তিনি আর কিছু জানেন না বলে দাবি করেন।

মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা-সদরপুর-চরভদ্রাসন) আসনের সংসদ সদস্য।

মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন বলেন, “আরাফাত অনেক মামলার আসামি। বিষয়টি পরিকল্পনা করে হয়ত সাজিয়েছে। ওই ঘটনার আমি কিছু জানি না।”