চাকিরপশার নদী থেকে সড়ক ও অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের দাবি

কুড়িগ্রামে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে চাকিরপশার নদীর ওপর সড়কে সেতু নির্মাণ এবং অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের দাবি জানানো হয়েছে।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2020, 01:09 PM
Updated : 23 Sept 2020, 01:09 PM

বুধবার দুপুর দেড়টায় কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবে সৈয়দ শামসুল হক মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে চাকিরপশার নদী সুরক্ষা কমিটি, রিভারাইন পিপল ও গণকমিটি এ দাবি জানায়।

নদীটি বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন নামে পরিচিত। রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান ইউনিয়নে নদীটি বুড়িতিস্তা, তার উজানে সুকদেব এলাকায় মরাতিস্তা, তারও উজানে চাকিরপশার নামে পরিচিত। এ নদী মূলত উলিপুর দিয়ে প্রবাহিত বুড়িতিস্তার উজানের অংশ। নদীটি বিভিন্ন নামে প্রবাহিত হয়ে উলিপুর উপজেলার কাচকোল এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদে মিশেছে।

সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও এই কমিটির সমন্বয়ক ড. তুহিন ওয়াদুদ। সাংবাদিকদের প্রশ্ন-উত্তর পর্বে অংশ নেন

সংগঠনের আহ্বায়ক খন্দকার আরিফ, সদস্য-সচিব তারেক আহমেদ।

তারা জানান, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনে ২২ জন অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদের নির্দেশ মানা হয়নি।

১৬২ জন জেলেকে বাদ দিয়ে এ নদীতে সরকারিভাবে পোনা অবমুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে তারা বলেন, যার মাধ্যমে দখলদারকে উৎসাহিত করা হয়েছে।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন বারবার অনুরোধ জানালেও রাজারহাট অংশে নদী দখল মুক্ত না হওয়ায় নদী সুরক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

তারা জানান, প্রায় ৪০ বছর আগে উলিপুরের থেতরাই এলাকায় তিস্তা নদী ভেঙে এ নদীর অনেকটাই ভেতরে ঢুকে পড়ে। তখন বুড়িতিস্তা দুই ভাগ হয়ে থেতরাই থেকে বুড়িতিস্তা (উলিপুর) তিস্তা নদীর শাখা নদীতে এবং উজানের বুড়িতিস্তা (রাজারহাট) তিস্তা নদীর উপ-নদীতে পরিণত হয়।

তারা জানান, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে উলিপুরে বুড়িতিস্তা খনন করা হয়। অন্যদিকে উজানের বুড়িতিস্তা মরতে বসেছে। এর ফলে প্রায় ২৫ হাজার একর ফসলের জমি চরম জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

সরকারি অব্যবস্থাপনা ও ব্যক্তিগত দখলে নদীটি অস্তিত্ব হারাচ্ছে দাবি করে তারা বলেন, রাজারহাটের পাঠানহাট-কৈলাশ এলাকায় এ নদীর ওপর সেতু ছাড়াই আড়াআড়ি সড়ক নির্মাণ করার কারণে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। পানিপ্রবাহ কমে যাওয়ায় নদীর ভাটিতে তলদেশ দ্রুত ভরাট হচ্ছে।

“নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ হওয়ায় ২০-২৫ হাজার একর দো-ফসলী জমি এক ফসলী জমিতে পরিণত হয়েছে। আগাম বর্ষা দেখা দিলে কোনো ফসলই হয় না।”

নদীর ওপর সেতুবিহীন সড়কটির কারণে উজানের পানি ভাটিতে প্রবাহিত হতে পারে না উল্লেখ করে তারা সেতু স্থাপনের দাবি জানান।

এক বছর ধরে চাকিরপশার সুরক্ষা কমিটি উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়ে আসছে। লিফলেট বিতরণ, নদীর পাড়ে সমাবেশ করেছেনও তারা।

চাকিরপশার নদীর উৎপত্তিস্থল কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের ইটাকুড়ি এলাকার নিম্নাঞ্চলে। ছাটমল্লিকবেগ, দিনা, নাটুয়ামহল, পুটিকাটা, পুনকর, চেতনা, দেবীচরণ, দক্ষিণ প্রাণপতি মৌজার নিম্নাঞ্চলের পানি মিলে এ নদীর প্রবাহের সূত্রপাত হয়েছে। লালমনিরহাটের পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের কোনো কোনো জায়গার পানিও ইটাকুড়িতে নেমে আসে।