মসজিদে বিস্ফোরণ: জেলা প্রশাসন কমিটির প্রতিবেদন জমা

নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকায় বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় তিতাস গ্যাসের পাইপে ছিদ্র, বিদ্যুতের স্পার্ক ও মসজিদ কমিটির অবহেলাকে দায়ী করে প্রতিবেদন তৈরি করেছে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2020, 04:09 PM
Updated : 17 Sept 2020, 04:09 PM

নারায়ণগঞ্জের ডিসি মো. জসিম উদ্দিনের কাছে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খাদিজা তাহেরী।

গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে এশার নামাজের সময় বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিকট শব্দে বিস্ফোরণে অর্ধশতাধিক মানুষ দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে এক শিশু, মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক, ইমাম ও মুয়াজ্জিনসহ অন্তত ৩১ জন মারা গেছেন। অন্যদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

বিস্ফোরণে মসজিদের ছয়টি এসি পুড়ে গেছে। জানালার কাচ বিস্ফোরণে উড়ে গেছে। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, জেলা প্রশাসন, তিতাস গ্যাস, ডিপিডিসি, সিটি করপোরেশন পৃথক পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

খাদিজা তাহেরী সাংবাদিকদের বলেন, “তদন্তে তিতাস গ্যাসের পাইপে ছিদ্র দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাছাড়া বৈদ্যুতিক স্পার্ক বা বৈদ্যুতিক ত্রুটির কারণে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এতে মসজিদ কমিটির অবেহলার বিষয়টি আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।

“তদন্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে ভবিষ্যতে দুর্ঘটনারোধে মসজিদ নির্মাণ-পরিচালনা নীতিমালা প্রণয়ন, গ্যাসের ডিজিটাল ম্যাপিং, অবৈধ সংযোগের বিচ্ছিন্ন অভিযান, সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর সময়ন্বসহ ১৮ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।”

তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে ডিসি জসিম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত শিশুসহ ৩১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিচ্ছেন আরও পাঁচজন।

“তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে, গ্যাসের পাইপে ছিদ্র থেকে গ্যাস জমে বিদ্যুতের স্পার্ক থেকে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। কমিটির প্রতিবেদন ও সুপারিশগুলো কেবিনেট বিভাগে পাঠানো হবে।”

এই প্রতিবেদনে যেসব সুপারিশ এসেছে সেগুলো বাস্তবায়িত হলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে দাবি করে তিনি বলেন, পাঁচ সদস্যের কমিটি ৪০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন তৈরি করেছে। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য কমিটি ১৮ দফা সুপারিশ করেছে।

তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় কমিটির সদস্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) টিএম মোশাররফ হোসেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ্ আরেফিন, তিতাস গ্যাস নারায়ণগঞ্জ দপ্তরের উপ-মহাব্যবস্থাপক মফিজুল ইসলাম ছিলেন।