আগের এলসির পেঁয়াজ দিতে ভারতের ব্যবসায়ীদের চিঠি

ভারত সরকার রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার আগে খোলা এলসির পেঁয়াজ দেওয়ার জন্য সেদেশের ব্যবসায়ীদের চিঠি দিয়েছে ‘হিলি স্হল বন্দর আমদানি রপ্তানি গ্রুপ।’

জিয়া শাহীন বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Sept 2020, 06:27 PM
Updated : 15 Sept 2020, 06:27 PM

মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এ সংগঠনের সভাপতি হারুন অর রশীদ। 

হারুন অর রশীদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, হিলি স্হল বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানির জন্য ১০ হাজার মেট্রিক টনের বেশি এলসি করা আছে।

“আমরা আমদানি এবং রপ্তানি গ্রুপ হিলি স্হল বন্দর চেম্বার অব কমার্স কোলকাতা এবং মালদহ চেম্বার অফ কমার্সকে চিঠি দিয়ে চাপ দিয়েছি।”

এ ব্যাপারে ওপার থেকে আশ্বাস মিলেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করুক তা তাদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু এলসি করা পেঁয়াজ আমাদের দিতে হবে।”

গত সোমবার ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধের ঘোষণা দেয়।এরপর রাত পোহাতে না পোহাতেই বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে।

দেশের অন্য জায়গার মতোই মঙ্গলবার ভোর থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকার পাইকারি বাজারগুলোতেও কয়েক দফায় সব ধরনের পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়। একদিনের ব্যবধানেই প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৯০ থেকে ১০০ টাকা হয়ে গেছে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে।

আমদানি বন্ধ করলেও হঠাৎ করে পেঁয়াজের এই মূল্যবৃদ্ধি কোনো যুক্তি নাই বলে মনে করেন এই ব্যবসায়ী নেতা। তবে বাজারে গিয়ে এই দাম বাড়ার জন্য কারণ জানতে চাইলে খুচরা বিক্রেতা পাইকারদের, পাইকার আমদানিকরকদের দুষছেন।

বগুড়া ফতেহ আলী কাচা বাজারের  খুচরা বিক্রেতা মতিয়ার রহমান এবং নরেশ সাহা বলেন, রাজা বাজারের পাইকারি আডৎ থেকে যে দামে কিনি তার চেয়ে কেজি প্রতি দুই টাকা লাভ করি। আডতেই দাম বেশি নিচ্ছে। আমরা কি করব?

রাজাবাজারের দয়াল ভাণ্ডার আড়তের মালিক রুনু আহাম্মেদ জানান, এলসি যারা করে তাদের কাছ থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে তাই তারাও লাভ রেখে বিক্রি করছেন।

বগুড়া শহরের মালতি নগরের তরিকুল ইসলাম, সুত্রাপুরে রোমা সরকারসহ অনেকেই জানান, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করল, অন্তত এক মাস পর দাম বেশি হওয়ার কথা। হঠাৎ করে ঘণ্টায় ঘণ্টায় পেঁয়াজের দাম ১২০ টাকা কেজি কীভাবে হল?

তারা বলছেন প্রশাসনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত।

বগুড়া জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক জানান, কেউ অহেতুক পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করবে এটা হতে দেবেন না।

বাজার মনিটরিং এ ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে বলে জানান তিনি।

গতবছরের সেপ্টেম্বরে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশে পণ্যটির দাম বাড়তে বাড়তে প্রতি কেজি ৩০০ টাকায় ওঠে। বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও বাজার সহনীয় হতে হতে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত লেগে যায়।

সোমবার আবারও ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধের ঘোষণা দিলে সীমান্তে বাংলাদেশ অভিমুখী পেঁয়াজের ট্রাক আটকে দেন দেশটির ব্যবসায়ীরা।