রাজশাহী নগরীর মতিহার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে এ মামলা ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বাবা সোমবার রাতে এ মামলার করেন বলে জানিয়েছেন ওসি এএসএম সিদ্দিকুর রহমান।
রকিবুল হাসান রবিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (টিএসসিসি) সংগীতের উপপরিচালক।
এর আগে এ অভিযোগ ওঠায় রবিনকে জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছেও অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, ২০১০ সালে তার মেয়ে ১২ বছর বয়সে রকিবুল হাসানের কাছে গান শিখত। রবিন বাড়িতে এসে গান শেখাতেন। এ ছাড়া জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের রিহার্সেলও এই বাড়িতে হতো। রকিবুল পরিবারের সদস্যদের কাছে বিশ্বস্ত হয়ে ওঠেন। এই সুযোগ ব্যবহার করে তার মেয়ের ওপর যৌন নির্যাতন করেছে রকিবুল। তখন ভয়ভীতি দেখিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। সে সময় ভুক্তভোগী এ বিষয়ে তার বাবা-মাকে এসব ঘটনা বলতে সাহস পায়নি।
ওই ছাত্রীর বাবা জানান, বর্তমানে তার মেয়ে ভারতে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। কয়েক মাস আগে দেশে ফিরে তার মেয়ে জানতে পারেন, রকিবুল আরও অনেকজন মেয়ের সঙ্গে এ রকম অনৈতিক কাজ করেছেন।এরপরই ভুক্তভোগী তাদেরকে (বাবা-মা) বিষয়টি বলেছেন। আর যেন কোনো মেয়ের ক্ষতি না করতে পারে। এছাড়া এই ঘটনার অন্যায়ের প্রতিবাদ করা উচিত। এ রকম উপলব্ধি থেকে তার মেয়ে মুখ এর প্রতিবাদ করছেন।
রকিবুল হাসান রবিন জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। রাবি টিএসসিসির এক সময়ের সঙ্গীত প্রশিক্ষক রকিবুল হাসান রবিন বর্তমানে সেখানেই সঙ্গীতের উপপরিচালক পদে রয়েছেন।
ওই ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে ৩১ অগাস্ট রবিনকে জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। একই দিন ঘটনা তদন্তে সংগঠনটির পক্ষ থেকে একজনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে।
সেলের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক রেজিনা লাজ বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা প্রথম সভা করেছি। করোনার কারণে খুব একটা বসা যাচ্ছে না। তাই এটা বলা যাবে না, যে এত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারব। কারণ ঘটনাটা অনেক আগের। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি।”
এ বিষয়ে জানতে রকিবুল হাসান রবিনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ওসি সিদ্দিকুর রহমান জানান, ভুক্তভোগীর বাবার করা মামলার বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।