ইউজিসির চেয়ারম্যানের কাছে বুধবার পাঠানো চিঠিতে এই অভিযোগ তোলেন উপাচার্য। এই শুনানিকে তিনি বেআইনি ও আদালত অবমাননাকর বলেও দাবি করেছেন।
চিঠি পাঠানোর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক মো. আজিজুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকদের একাংশ যে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে, সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর ইউজিসি এই শুনানির দিন ঠিক করেছে।
চলতি বছর ৪ জানুয়ারি উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে ‘তথ্য-উপাত্ত সংবলিত’ ৩০০ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন ও ইউজিসি জমা দেয় শিক্ষকদের একটি অংশ।
সেখানে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়ার বিরুদ্ধে মোট ১৭টি অভিযোগ আনেন এই শিক্ষকরা। তার ভিত্তিতে ইউজিসি একটি তদন্ত কমিটি করে বিষয়টি তদন্তে নেমেছে।
চিঠিতে উপাচার্য উল্লেখ করেছেন, “আমার বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে এ বিষয়টি হাই কোর্ট ও আপিল বিভাগে বিচারাধীন। একই বিষয় নিয়ে তাই তদন্ত বা প্রশ্ন উত্থাপন করা আদালত অবমাননার শামিলও বটে।”
উপাচার্য তার ওই চিঠিতে তদন্ত কমিটির প্রধানের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও তুলেছেন।
“উপাচার্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠনের কোনো ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে দেওয়া হয় নাই। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উপাচার্যের বিরুদ্ধে নামে-বেনামে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তে আপনার নির্দেশে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (বিমক) একজন সিনিয়র সহকারী পরিচালক এবং উপাচার্যের সমমর্যাদাসম্পন্ন বিমকের দুইজন সম্মানিত সদস্য সমন্বয়ে বর্ণিত তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে যা আইনসিদ্ধ নয়।”
চিঠিতে বলা হয়েছে, “আইন অনুযায়ী তদন্ত কমিটির সদস্যবৃন্দের মর্যাদা উপাচার্যের মর্যাদার এক ধাপ উপরে হওয়া বাঞ্ছনীয়। মহামান্য রাষ্ট্রপতি তথা আচার্য কর্তৃক উপাচার্য নিয়োগপ্রাপ্ত হন। উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত তাই শুধুমাত্র নিয়োগকর্তা দ্বারা সম্পন্ন করা আইনসিদ্ধ। কিন্তু আইনবহির্ভূতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক একজন সিনিয়র সহকারী পরিচালক ও উপাচার্যের সমমর্যাদাসম্পন্ন দুইজন সদস্য সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি কর্তৃক তদন্তকার্য পরিচালনা শুধু বেআইনিই নয়, বরং এর মাধ্যমে মহামান্য রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাকেও খর্ব করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ইউজিসি চেয়ারম্যান তিন সদস্যের কমিটি করে দিয়েছেন। নিরপেক্ষভাবে তদন্ত কাজ করা হচ্ছে। পক্ষপাতমূলক কোনো কাজ কমিটির কোনো সদস্যই করেননি। সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে আমরা অভিযোগগুলো তদন্ত করছি।
“শিক্ষকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে দালিলিক প্রমাণসহ বক্তব্য চাওয়া হয়। পরে উপাচার্য একটি চিঠিতে উন্মুক্ত শুনানির জন্য কমিটিকে অনুরোধ করেন। পরে জুম অ্যাপের মাধ্যমে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে উন্মুক্ত শুনানির বিষয়ে তিনি রাজি হননি। তিনি বাদী-বিবাদীর উপস্থিতিতে উন্মুক্ত শুনানি করার জন্য অনুরোধ জানান। উন্মুক্ত শুনানিটাও তো তার অনুরোধেই করা হচ্ছে। এখানে উনি আবার ৭৩ অ্যাক্ট টেনে আনেন কিভাবে।”
এ বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম উপাচার্যের বক্তব্য জানতে পারেনি।