লক্ষ্মীপুরে কৃষককে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ

লক্ষ্মীপুরে ‘জমি হাতিয়ে নেওয়ার জন্য’ চুরির অপবাদ দিয়ে এক কৃষককে গাছের সাথে বেঁধে বেদম মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Sept 2020, 05:21 PM
Updated : 1 Sept 2020, 05:21 PM

‘হুমকির মুখে চিকিৎসা বঞ্চিত’ ওই কৃষককে মারধরের এক সপ্তাহের বেশি সময় পর সোমবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে স্থানীয়রা।

আহত দরিদ্র কৃষক আমির হোসেন সদর উপজেলার চররমনী ইউনিয়নের চরআলী হাসান এলাকার বাসিন্দা। তার তিন সন্তান রয়েছে।

সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আরমানুর রহমান অপু জানান, কৃষক আমির হোসেনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে এখনো তাকে আশঙ্কামুক্ত বলা যাবে না। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তা বলা যাবে।

নির্যাতিত কৃষক পরিবারের অভিযোগ, সালিশ বসিয়ে মারধরের ঘটনায় মামলা না করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে পুরো পরিবারের কাছ থেকে জোর করে কয়েকটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছেন চররমনী মোহন ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল ও ইউপি সদস্য মো. স্বপন।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও কৃষকের পরিবারের সদস্যরা জানায়, গত ২৩ অগাস্ট রাতে ঘরের ফেরার পথে আমির হোসেনকে চুরির অপবাদ দিয়ে আটক করে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন চালায় কয়েকজন প্রতিবেশী। এক পর্যায়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল ও ইউপি সদস্য স্বপনকে খবর দেন তারা। পরে তাদের উপস্থিতিতেও বেদম মারধর করা হলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ওই কৃষক। তার চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে আমির হোসেনকে ইউপি সদস্য স্বপনের বাড়িতে নিয়ে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

কৃষকের স্ত্রী ও সন্তান জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল তাদের কাছে ২০ শতক জমি দিতে চাপ সৃষ্টি করে। ওই জমি না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যানের নির্দেশে চুরির অপবাদের নাটক সাজিয়ে গাছের সাথে বেঁধে বর্বর নির্যাতন চালানো হয়।

নির্যাতিত আমির হোসেন জানান, ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল দীর্ঘদিন ধরে তার কাছ থেকে কিছু জমি বাগিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন। ওই জমি দিতে রাজি না হওয়ায় পরিকল্পিতভাবে চুরির অপবাদ দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে বর্বর নির্যাতন চালায়।

মামলা না করতে ও চিকিৎসা না নেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে তিনিসহ তার স্ত্রী ও তিন সন্তানের কাছ থেকে কয়েকটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন চেয়ারম্যান জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের ভয়ে তার পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে।

তবে চররমনী মোহন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও নিজেদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন।

তিনি বলেন, “কৃষক আমির হোসেনকে চুরি করার অপরাধে স্থানীয়রা মারধর করেছে।”

এ ঘটনা এবং জমির বিষয়ের সাথে তিনি জড়িত নন বলেও দাবি করেন তিনি।

লক্ষ্মীপুর সদর থানার ওসি আজিজুর রহমান জানান, এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।