নাসরিন ইসলাম আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দায়িত্বে রয়েছেন।
এ বহিষ্কার প্রসঙ্গে রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান রোমান বলেন, “বিষয়টি স্পর্শকাতর এবং দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়। দল যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটার প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন থাকবে। তাই এই বিষয়ে আমি কোনো কথা বলতে চাই না।”
গত সোমবার রাঙামাটি জেলা কৃষক লীগের সভাপতি জাহিদ আকতার এবং সাধারণ সম্পাদক উদয় শংকর চাকমা যৌথভাবে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রকাশের মাধ্যমে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করায়’ বাংলাদেশ কৃষক লীগ সদর উপজেলা কমিটির মহিলা সম্পাদিকা পদ থেকে নাসরিক ইসলামকে ‘সাময়িকভাবে বহিষ্কার’ করা হয়েছে।
একই দিন পৃথক এক বিবৃতিতে রাঙামাটি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির সভাপতি দীপক চাকমা এবং সাধারণ সম্পাদক সুখময় চাকমা যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “নাসরিন ইসলাম বর্তমানে আমাদের কোনো কমিটিতে নাই, সদস্য পদেও নাই। তাই তার কোনো কাজের দায়ভার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ বহন করবে না।”
এর এক দিন আগে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে নাসরিন গত ২৪ অগাস্ট তার বাসায় ছাত্রলীগের চার নেতা ‘লাঞ্ছনার এবং শ্লীলতাহানি চেষ্টা’ করে বলে অভিযোগ তোলেন।
সেখানে তিনি সেই দিনের ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২৪ অগাস্ট রাত ৯টায় উপজেলা পরিষদের টিউবওয়েল বসানো নিয়ে আমার বাসায় এক সভা চলাকালীন সময় রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর জব্বার সুজনের ছত্রছায়ায় তারই লালিত ছাত্রলীগের চার নেতা হামলা করে।
“এ সময় বাসার ভেতর ভাঙচুরসহ আমাকে শ্লীলতাহানিরও চেষ্টা চালায়।”
এই ছাত্রলীগ নেতারা স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতার ঘনিষ্টজন বলে জানা গেছে।
“আমরা দরজা খুলে দেখি ভাইস চেয়ারম্যান প্রকল্পের কিছু কাগজপত্র দেখছেন। বাইরে থেকে যে দরজা বন্ধ, সেটি তখনো তিনি জানেন বলে মনে হয়নি। আমাদের কাছে অস্বাভাবিক কোনো কিছুই চোখে পড়েনি।
“তবে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করার বিষয়টির কারণে উনি প্রচণ্ড ক্ষুদ্ধ হন এবং বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেগুলোও হৈচৈ করছিল। পরে সেখান থেকে আমরা তাদের সরিয়ে দিই।”
এ ঘটনায় ভাইস চেয়ারম্যানের থানায় করা অভিযোগের তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
এদিকে, বিচার চেয়ে উল্টো বহিষ্কার হওয়ার ঘটনায় নাসরিন ইসলাম বলেন, “২৪ অগাস্ট রাতের ঘটনার পর আমি দলের সব নেতাদের কাছে বিচার দিয়েছি,সবাইকে জানিয়েছি, কেউ কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
“এমনকি আমি থানায় যে অভিযোগ করেছি,তারাও চাপের কথা বলে মামলা নেয়নি, সাধারণ ডায়রি নিয়েছে।”
এদিকে, রাঙামাটি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপক চাকমা বলেন, “সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটিতে নাসরিন ইসলাম সাংস্কৃতিক সম্পাদক হলেও যেহেতু ওই কমিটি এখনো অনুমোদন পায়নি, তাই সে আমাদের কেউ নয়।’
তাহলে কীভাবে তাকে ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “কোনো প্রার্থী ছিল না,তাই বিশেষ প্রেক্ষিতে তাকে মনোনয়ন দিয়েছি।”
‘ফেইসবুকের বিভিন্নজনের পোস্ট দেখেই তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে’ স্বীকার করে তিনি বলেন, সে দোষী নাকি নির্দোষ সেটা আমি জানি না। তদন্ত করে যে বা যারা দোষী তাদের খুঁজে বের করুক প্রশাসন।