২০০৪ সালের ভয়াবহ ওই গ্রেনেড বিস্ফোরণে আইভী রহমান গুরুতর আহত হন এবং তিন দিন পর তিনি মারা যান।
দিনটি পালনোপলক্ষে কিশোরগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী সমাবেশে শেখ হাসিনার বক্তব্য শেষ হওয়া মাত্র গ্রেনেড হামলা ও গুলিবর্ষণ শুরু হয়। এতে আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত এবং কয়েকশ মানুষ আহত হন। হামলায় অল্পের জন্য শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচণ্ড শব্দে তার শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়।
সোমবার বেলা ১১টায় জেলা শহরের স্থানীয় নুরুল উলুম বালিকা মহিলা মাদরাসা ও এতিমখানায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিলকিস বেগম।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কামরুল আহসান শাহজাহান, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এনায়েত করিম অমি, জেলা পরিষদ সদস্য ফৌজিয়া জলিল ন্যান্সি, সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাসুমা আক্তার প্রমুখ।
সভায় বক্তারা আইভী রহমানের কর্মময় দিনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন এবং গ্রেনেড হামলার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও শাস্তি দাবি করেন।
আলোচনা সভাশেষে ২১শে অগাস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত আইভী রহমানসহ সকল শহীদদের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
ভৈরবে কর্মসূচি পালিত
দিনটি উপলক্ষে ভৈরব উপজেলাও বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
সকালে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও কালোব্যজ ধারণ করে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এছাড়াও সকাল সাড়ে ১০টায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সায়দুল্লাহ মিয়ার সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আলোচনা করেন দলের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সেন্টু, পৌর কমিটির সভাপতি এসএম বাকি বিল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভ, ভৈরব চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
১৯৪৪ সালের ৭ জুলাই বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব শহরের চন্ডীবের গ্রামে আইভি রহমান জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা অধ্যাপক জালাল উদ্দিন আহমেদ ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। মা হাসিনা বেগম ছিলেন গৃহিণী। আট বোন ও চার ভাইয়ের মধ্যে আইভি ছিলেন পঞ্চম। ১৯৫৮ সালের ২৭ জুন নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা জিল্লুর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
১৯৭১ সালে ভারতে সশস্ত্র ট্রেনিং গ্রহণ করে তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে ১৯৭৮ সালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা নির্বাচিত হন। ১৯৮০ সালে কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।