শুক্রবার সন্ধ্যায় জামালপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডাক্তার সুলতানা পারভীনের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন আজাদ ও ছোট বোন মেরিনা পারভীন এ দাবি করেন।
জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সুলতানা পারভীনের লাশ গত রোববার (১৬ অগাস্ট) সরকারি বাসভবন থেকে উদ্ধার করা হয়।
সেদিন মেলান্দহ থানার ওসি রেজাউল ইসলাম খান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন ডাক্তার সুলতানা পারভীন আত্মহত্যা করেছেন বলে তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন।
তবে সংবাদ সম্মেলনে মেরিনা পারভীন দাবি করেন, তার বোন ‘আত্মহত্যা’ করেনি, বরং তাকে ‘পরিকল্পিতভাবে হত্যা’ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমার বোনের মৃত্যু নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তার ঠোঁট কাটা ছিল; চোখ, মুখ ও নাক রক্তাক্তসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। জিহবায় দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়া ছিল। শ্বাসরোধে করে হত্যা করার মতো গলায় কালশিটে দাগ ছিল। আমাদের অনেক দেরিতে খবর দিয়েছে পুলিশ। আমরা আসার পর স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ ন্যূনতম সহযোগিতা দূরে থাক, সহমর্মিতাও দেখায় নি। যে ভবন থেকে আমার বোনের লাশ উদ্ধার হয়েছে সেই ভবনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। অনুনয় বিনয় করলেও লাশটা পর্যন্ত দেখতে দেওয়া হয়নি। লাশ দেখার জন্য সাহায্য চাইলেও লাশ দেখার পারমিশন দেয়নি স্থানীয় স্বাস্থ বিভাগ। লাশটা রেখেছিল গুদাম ঘরে; সামনে ডাস্টবিন। একটা ছোট্ট স্টোর রুমে পলিথিনে বাঁধা অবস্থায় ছিল আমার বোনের লাশটা। তৃতীয় দিনে দাফন করতে হয়েছে আমাদের।”
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মেরিনা আরও বলেন, একজন নারীর লাশ এভাবে খোলা আকাশের নিচে রাস্তায় ময়নাদতন্ত করা হয়েছে যা খুবই অবমাননাকর। লাশ বাড়িতে নেওয়ার জন্য সরকারি অ্যাম্বুলেন্স চাইলেও দেওয়া হয়নি। অনেক কষ্টে জামালপুর থেকে রাজশাহীতে গ্রামের বাড়িতে লাশ নিতে হয়েছে। পোস্টমর্টেমের সঠিক রিপোর্ট পাবো কিনা তা নিয়েও আমরা শঙ্কায় রয়েছি।”
এ সময় স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তসহ ময়নাতদন্তের সঠিক রিপোর্টেরও দাবি জানান তিনি।
“আমার মেয়ে তার দক্ষতা ও সেবায় মেলান্দহে সুনাম অর্জন করায় স্থানীয় ডাক্তাররাও হুমকি দিত সে যেন প্রাইভেট প্র্যাকটিস না করে। কলিগরাও তার প্রতি ঈর্ষা পরায়ণ ছিল। এদেরকেও সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যায়না “
ডাক্তার সুলতানা পারভীনের পরিবারের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জামালপুরের সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ সহযোগিতা করেনি এমন অভিযোগ সঠিক না। অ্যম্বুলেন্স নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম আছে; নিয়ম মানলেই তারা অ্যাম্বুলেন্স পেতেন।”