পঞ্চগড়ে বাঘ আতঙ্কে নির্ঘুম রাত, ধরতে ঢাকার শিকারি দল

ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা পঞ্চগড়ের কয়েকটি গ্রামে বাঘ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আর এসব বাঘ ধরতে ঢাকা থেকে এক দল শিকারি পাঠানো হয়েছে।

পঞ্চগড় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 August 2020, 03:00 PM
Updated : 20 August 2020, 03:00 PM

পঞ্চগড়ের চা বাগানে কয়েক বাঘ দেখতে পেয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। এসব গ্রামে বাঘ আতঙ্কে মানুষ রাত জেগে পাহাড়া দিচ্ছে। স্থানীয়রা দুটি প্রাপ্ত বয়স্ক ও তিনটি বাচ্চা বাঘ দেখেছেন বলে তথ্য রয়েছে বলে জানান দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগীয় কর্মকর্তা আব্দুর রহমান।

তিনি বলেন, “স্থানীয়দের বর্ণনা অনুযায়ী আমরা ধারণা করছি বাঘগুলো চিতাবাঘ।”

বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর ঢাকা থেকে একটি অভিজ্ঞ শিকারি দল পাঠানো হয়েছে বলে জানান এ বন কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, তবে বাঘগুলোর সুনির্দিষ্ট অবস্থান এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি বাঘগুলোর অবস্থান নিশ্চিত হয়ে বাঘগুলোকে জীবিত অবস্থায় ধরতে।

লোকজনকে সতর্ক থাকতে বুধবার রাতে মাইকিংও করা হয় বললেন তিনি।

বাঘ আতঙ্কে মাসখানেক ধরে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন বলে সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের মুহুরিজোত, সাহেবীজোত, উষাপাড়া ও বাদিয়াগছ গ্রামের মানুষরা দাবি করেছেন।

উষাপাড়া গ্রামের আবুল কালাম জানান, গত বুধবার বিকালে আমি গরু নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। যে গরুটি আগে আগে যাচ্ছিল সে-ই গরুটির উপর হামলা করে বাঘটি। মুহূর্তের মধ্যে গরুটি হত্যা করে বাঘটি তার কাছে বসে ছিল। আমি গরুটি উদ্ধার করতে গেলে আমার দিকেও তেড়ে আসে। পরে আমি চিৎকার করলে স্থানীয়রা ছুটে আসে। এতে বাঘটি দ্রুত পালিয়ে যায়।

একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সপ্তাহ খানেক আগে রাতে দশমাইল বাজার থেকে তিনজন মিলে হেঁটে বাড়ি ফেরার পথে দেখি একটি বাঘ সড়ক পেরিয়ে চা বাগানের দিকে যাচ্ছে। আমরা লাইট নিয়ে পেছনে পেছনে কিছুদূর গিয়ে দেখি বাঘটি জঙ্গলের ভেতরে ঢুকে পড়ল। তারপর থেকে প্রতিদিন আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বের হচ্ছি না।

দিনের বেলাতেই মাঠে কাজ করতে ভয় লাগে বলে তিনি জানান।

সাহেবীজোত গ্রামের হাজিব উদ্দিন জানান, গ্রামের পুরোনো চা বাগানটিতে বাঘটি রয়েছে। এজন্য আমরা চা বাগান কেটে ফেলে বাঘ ধরার অনুরোধ করেছি।

আকারে লম্বা এবং গায়ে কালো গোল ছাপ দেখে সেগুলো চিতাবাঘ বলে তারা ধারণা করছেন তারা। তাদের মধ্যে দুটি বড় বাঘ ও তিনটি বাচ্চা বাঘ রয়েছে। রাত হলেই বাঘগুলো বের হয়ে গ্রামের দিকে চলে আসে বলে জানান তারা।

এদিকে বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা যায়, পুরোনো চা বাগান এলাকায় শত শত উৎসুক মানুষের ভিড়। দূর দূরান্ত থেকে তারা বাঘ দেখতে এসেছেন। কেউ কেউ চা বাগানের ভেতরে ঢুকে বাঘের দেখা পাওয়ার চেষ্টা করছেন। বিভিন্ন স্থানে বাঘ ধরতে ফাঁদ পেতে রাখা হয়েছে।