বুধবার গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আল মারুফ এ কথা জানান।
জেলায় নদ-নদীর পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে জানিয়ে গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য বলেন, মধুমতি নদীর পানি কমে বিপদসীনার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া মধুমতি বিলরুট চ্যানেলের পানি কমে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদীর পানিও প্রতিদিন কমছে।
আল মারুফ বলেন, এখন পর্যন্ত জেলায় ৩ ১৩ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে; ১০৩ টি আশ্রায়কেন্দ্রে প্রায় ৮০০ পরিবারের ৪ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। ১৫৭ টি আশ্রায়ন কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বন্যা দুর্গতদের মধ্যে দেড়শ’মেট্রিকটন চাল, ২ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। তাদের জন্য ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে জেলা প্রশাসন।
কোটালীপাড়া উপজেলার মাছপাড়া গ্রামের কমলা সরকার (৫৬) বলেন, “বন্যার পানিতে বাড়িঘর তলিয়ে রয়েছে; ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। পুকুরপাড়ের সবজি নষ্ট হয়েছে। গবাদি পশু, হাঁস মুরগি স্বামী, ছেলে ও পরিবার পরিজন নিয়ে খুব বিপাকে রয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে সাহায্য সহযোগিতা পেয়েছি।”
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুর ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম বাবুল বলেন, বন্যায় তার ইউনিয়নের অন্তত ৩ হাজার ৮০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিতে ইউনিয়নের ৩৫ কিলোমিটার কাঁচাপাকা সড়ক তলিয়ে গেছে। এছাড়া মাছের শতাধিক ঘের ভেসে গেছে। এতে অন্তত ১২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এদিকে বন্যার পানিতে আমন ধানের বীজতলা ও উঠতি আউশ ধান তলিয়ে রয়েছে এছাড়া সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ডিডি ড. অরবিন্দু কুমার রায় জানান।
গোপালগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ বৈরাগী জানান, জেলার প্রায় ৪ হাজার ঘের ও পুকুর প্লাবিত হয়ে অন্তত ১৮ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। এতে ৫ হাজার মৎস্যচাষি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।