বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও ৪৯ কম্পিউটার চুরি

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও ৪৯টি কম্পিউটার চুরি হয়েছে।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2020, 01:33 PM
Updated : 10 August 2020, 02:14 PM

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানান, ঈদের ছুটি শেষে রোববার অফিস খোলার পর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের এই প্রায় অর্ধশত কম্পিউটার চুরির এই ঘটনা জানা যায়।  

এ নিয়ে চার বছরের মধ্যে তিন দফায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪৬টি কম্পিউটার চুরি হলো। এর আগে ২০১৮ সালে ৪৭টি ও ২০১৭ সালে ৫০টি কম্পিউটার চুরি হয়েছে। এসব চুরির ঘটনার কোনোটির সুরাহা হয়নি।

এদিকে, এই ঘটনা তদন্তে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইন অনুষদের ডিন আবদুল কুদ্দুস মিয়াকে সভাপতি ও রেজিস্ট্রার নূরউদ্দিন আহমেদকে সদস্য সচিব করে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন  দিতে বলা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, “গত রোববার [৯ অগাস্ট] কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার খুলে দেখা যায় পেছনের দিকের জানালা ভেঙে ৪৯টি কম্পিউটার নিয়ে গেছে। আমরা তখনই সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করার চেষ্টা করি।”

করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার পর সীমিত আকারে অফিসের কাজকর্ম শুরু হলেও নিয়মিত পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যে গত ২৪ জুলাই থেকে ৮ অগাস্ট ছিল অফিসে ঈদুল আজহার ছুটি।   

তিনি জানান, কিন্তু ২৭ জুলাইয়ের আগের সব ফুটেজ সিসিটিভি থেকে মুছে গেছে। প্রতি ১৪ দিন পরপর সিসিটিভির ফুটেজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুছে যায়।

“ধারণা করা হচ্ছে ২৭ জুলাই ১৪ দিন হওয়ার পর হয়ত সিসিটিভি ফুটেজ মুছে গেছে। তারপরও ২৭ জুলাইয়ের পরের সব ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।” 

নিরাপত্তা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম আরও বলেন, গত ২০ জুলাই উপাচার্য এখানে এলে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার খোলা হয়। তখনও সেখানে কম্পিউটারগুলো ছিল। তাই ধারণা করা হচ্ছে ২০ জুলাইয়ের পর ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে এই চুরির ঘটনা ঘটে।

“চোরচক্র হয়ত পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। যে কারণে সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও আমরা ওই ফুটেজ মেমোরি থেকে উদ্ধার করার চেষ্টা করছি।”

নিরাপত্তার বিষয়ে তরিকুল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ জন গার্ডের মধ্যে ২০ জন জুলাই মাসের ২৩ তারিখ থেকে কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া অনুপস্থিত ছিলেন। তাই নিরাপত্তা নিয়ে কিছুটা সমস্যা ছিল।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও তদন্ত দলের সদস্য সচিব নূরউদ্দিন আহমেদ বলেন, ঈদের ছুটি শেষে রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পরে কম্পিউটার চুরির বিষয়টি সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ অবগত হয়। এ ঘটনায় মামলা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

এ নিয়ে তিন দফায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪৬টি কম্পিউটার চুরি হলো বলে তিনি জানান।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, “চুরির ঘটনা জানতে পেরে আমরা ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চুরির ঘটনাটিকে রহস্যজনক বলে মনে হচ্ছে।”

লিখিত অভিযোগ পেলে মামলা দায়ের করা হবে বলে তিনি জানান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি চুরির ঘটনায় মামলা হয়েছে। কিন্ত চুরির রহস্য উদঘাটন করা হয়নি।

সিসিটিভি ক্যামেরা থাকা সত্বেও বিভিন্ন ঘটনার পর অধিকাংশ  ফুটেজ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি এবং এ কারণে একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্র এ ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে।

এ চক্রকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনলে চুরি বন্ধ হতে পারে বলে তাদের বিশ্বাস।