সিনহা হত্যা: কারা ফটকে চার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ

কক্সবাজারে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে র‌্যাবের তদন্ত দল।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 August 2020, 01:09 PM
Updated : 8 August 2020, 01:09 PM

শনিবার দুপুর ২টার পর থেকে এ মামলার চার আসামিকে আদালতের আদেশ অনুযায়ী কক্সবাজার জেলা কারাগারের ফটকে দুই দিন জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে বলে জানান র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ানের উপ-অধিনায়ক মেজর মেহেদী হাসান।

এছাড়া সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া অপর তিন আসামি টেকনাফ বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত হওয়া পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং এসআই নন্দলাল রক্ষিতকে রোববার র‌্যাবের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান র‌্যাবের এ উপ-অধিনায়ক।

মেজর মেহেদী হাসান বলেন, শনিবার দুপুর থেকে এ চার জনকে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদেরকে আগামীকাল পর্যন্ত দুই দিনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করা হবে।

“মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও তদন্ত দলের সদস্যরা এ চার আসামিকে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ঘটনার ‘ক্লু’ উদ্ঘাটনের চেষ্টা করা হবে। “

এদিকে, কক্সবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেনও নিশ্চিত করেছেন সিনহা হত্যা মামলার চার জন আসামিকে প্রথম দিনের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

মোকাম্মেল বলেন, “শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে কক্সবাজার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালত থেকে সিনহা হত্যা মামলার এই সাত আসামির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জেলা কারাগারে পৌঁছেছে। এরপরই কারাফটকে র‌্যাবের তদন্তদলের সদস্যরা চার জন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন।”

এছাড়া আগামী রোববার সাত দিনের রিমান্ডের আদেশপ্রাপ্ত তিন আসামিকে র‌্যাব হেফাজতে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার তথ্যও জানান এ জেল সুপার।

গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ বাহারছড়া চেকপোস্টে তল্লাশির সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।

এরপর ৩ অগাস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ঘটনার তদন্তে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত দল গঠন করে।

৫ অগাস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ বিচারিক হাকিমের আদালতে পুলিশের বরখাস্ত পরিদর্শক লিয়াকত আলি ও বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয় জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ওইদিন রাতেই টেকনাফ থানায় মামলাটি নথিভুক্ত হয়।

৬ অগাস্ট বরখাস্ত পরিদর্শক লিয়াকত ও ওসি প্রদীপসহ মামলার সাত আসামি আদালতে আত্মসমর্পন করেন। এতে র‌্যাব আদালতে প্রত্যেক আসামির বিরুদ্ধে ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করলে বিচারক লিয়াকত, প্রদীপ ও দুলালকে সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর এবং চার জন আসামিকে দুই দিন করে কারা ফটকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেয়। এছাড়া অনুপস্থিত থাকা মামলার অপর দুই আসামিকে পলাতক দেখিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। তবে জেলা পুলিশের ভাষ্য, পলাতক এএসআই টুটুল ও কনস্টেবল মোস্তফা নামের কোনো পুলিশ সদস্য বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্র ও টেকনাফ থানায় কর্মরত ছিল না।