সরেজমিনে দেখা গেছে, আলফাডাঙ্গা উপজেলায় মধুমতী পারের বাজড়া, চর আজমপুর, চরডাঙ্গা, চাপুলিয়া, চরধানাইড়, শিকিপাড়া, চরনারান্দিয়া, বাঁশতলাসহ ১০টি গ্রাম এখন হুমকির মুখে রয়েছে।
এরই মধ্যে কয়েক গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র গোপালপুর-চরডাঙ্গা পাকা সড়কের প্রায় ৫০০ মিটার নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। একই সঙ্গে নদীগর্ভে চলে গেছে চাপুলিয়া গুচ্ছগ্রাম ও আশ্রয়ন কেন্দ্রের ৬৫টি ঘর, বাজড়া পশ্চিম পাড়া জামে মসজিদ, চরআজপুর গ্রামের বাড়িঘরসহ গোটা ত্রিশেক স্থাপনা। এখন হুমকির মুখে রয়েছে বাজড়া চরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিসহ অনেক বাড়িঘর।
“এ বছর বাড়ি মনে হয় আর থাকবে না। আমার এলাকায় গত কয়েক দিনে নদীপারের ২৫টি পরিবার বাড়িঘর ভেঙে নিয়ে দূরে চলে গেছে। অনেকেই যাওয়ার জন্য বাড়ি ঘর ভাঙতে শুরু করেছে।”
মাথা গোঁজার জায়গা নেই ওই ইউনিয়নের চর আজমপুর গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল শেখসহ অনেকের।
পাচুড়িয়া ইউনিয়নের ইকরামুজ্জামান বলেন, এই নদীতে স্থায়ী বাঁধ দেওয়া গেলে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ভাঙন থেকে রক্ষা পেত।
ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বোর্ডের ফরিদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, গত ১৫ দিনে মধুমতী তীরের টগরবন্দ, গোপালপুর, বুড়াইচ ও পাচুড়িয়া ইউনিয়ন ইউনিয়নে ১০-১২টি গ্রামে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে পাকা সড়ক, বাড়িঘর, কৃষিজমি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ গাছপালা ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
এছাড়া আলফাডাঙ্গা উপজেলার বাজড়া, চর আজমপুর, চাপুলিয়া, চরধানাইড়, শিকিপাড়া, চাপুলিয়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে তিনি জানান।
সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের ১০ কেজি করে চাল দিয়েছে বলে জানিয়েছেন টগরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইমাম হাচান শিপন।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান জানান, নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা হচ্ছে। সরকার তাদের সহযোগিতা করবে।
নদীভাঙন থেকে সম্পদ রক্ষায় স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনজুর হোসেন।
তিনি বলেন, আপাতত ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বাঁধের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্প তৈরি করছে। এটি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে চেষ্টা চলছে। বিষয়টি অনেক ব্যয়বহুল। এ কারণে কিছুটা সময় লাগবে।