নেত্রকোণায় নৌকাডুবি: মৃতদের একই পরিবারের ৮ জন

নেত্রকোনার মদনে হাওরে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ডুবে মারা যাওয়া ১৭ জনের মধ্যে ময়মনসিংহের একই পরিবারের ৮ জন বলে খবর পাওয়া গেছে।

ময়মনসিংহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 August 2020, 08:18 AM
Updated : 6 August 2020, 08:57 AM

এরা হলেন- ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ৫ নম্বর সিরতা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের মাদ্রাসায়ে মারকাযুস সুন্নাহ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও মোহতামিম মাহফুজুর রহমান মেয়াজ উদ্দিন (৩৮) তার বড় ছেলে মাহবুবুর রহমান আসিফ (১৭), ছোট ছেলে মাহমুদুর রহমান (১৪), ভাগ্নে রেজাউল করিম (১৮), ভাতিজা, মো. জুবায়ের হোসাইন (১৯), মো. মুজাহিদ মিয়া (১৪), মাহফুজুর রহমান মেয়াজ উদ্দিনের ভাতিজী লুবনা আক্তার (১০) ও জুলফা আক্তার (৭)।

এদের মধ্যে লুবনা ও জুলফা ইসরাহুল বানাত মহিলা মাদ্রাসা এবং বাকিরা মাদ্রাসায়ে মারকাযুস সুন্নাহ মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী।

সিরতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সায়ীদ জানা, বুধবার দুপুর বেলা ১২টার দিকে নেত্রকোণার মদনের উচিতপুরের সামনের হাওর গোবিন্দশ্রী রাজালীকান্দা এলাকায় এ নৌকাডুবির ঘটনায় নিহতদের মধ্যে আটজন তার ইউনিয়নের একই পরিবারের।

স্থানীয়রা জানায়, বুধবার সকালে ময়মনসিংহ সদর থানার ৫ নম্বর চরসিরতা ইউনিয়ন ও আটপাড়া তেলিগাতী থেকে প্রায় ৪৮ জন মিনি কক্সবাজার উচিতপুরে ঘুরতে যান। পরে হাওরের উত্তাল ঢেউয়ে গোবিন্দশ্রী রাজালীকান্দা একালায় নৌকা ডুবে যায়।

মাহফুজুর রহমানের ভগ্নিপতি আব্দুল কাইয়ুম বলেন, “সকালে পরিবারের সকলে নিয়ে আনন্দ ভ্রমনে গিয়েছিল। কে জানত এটাই যে তাদের শেষ বিদায়।” এ কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি ।

নিহত রেজাউলের মা রেহেনা খাতুন ছেলের কথা বলতে বলতে বার বার মূর্চ্ছা যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, “ছেলে ছোট থাকতেই তার বাবা মারা গেছেন। মামার বাড়িতে থেকেই রেজাউল পড়াশোনা করত।”

ইউপি চেয়ারম্যান আবু সায়ীদ জানান, , কোনাপাড়া গ্রামের মাদ্রাসায়ে মারকাযুস সুন্নাহ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক মাহফুজুর রহমান মেয়াজ উদ্দিনের দুই ছেলে, এক ভাগ্নে, দুই ভাতিজা ও দুই ভাতিজীসহ ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা প্রত্যেকেও হেফজ বিভাগের মিক্ষার্থী ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, “আমি বর্তমানে নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলায় আছি। মদন থানা থেকে ১৩ জনের লাশ পাঠিয়েছি। দুই জনের লাশ পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। একজন এখনো নিখোঁজ রয়েছে।”

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, নিহত ১৭ জন ময়মনসিংহের বাসিন্দা। এর মধ্যে গৌরীপুর উপজেলার ২ জন, সদর উপজেলার সিরতা ইউনিয়নের ১৪ জন ও ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ৩১ নাম্বার ওয়ার্ডের একজন।

মৃতদের প্রত্যেককে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

ময়মনসিংহ স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক একেএম গালিভ খান বলেন, নৌকাডুবির ঘটনায় মৃতদের পরিবারের খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি তাদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আরও কেউ মারা গেছে কি না তাও প্রশাসন জানার চেষ্টা করছে।