টাঙ্গাইলে বন্যায় বাড়ির পাশে ভাই-বোনের আর মহাসড়কে কিশোরের ডুবে মৃত্যু

টাঙ্গাইলের বন্যার পানিতে ডুবে দুই শিশুসহ তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 August 2020, 05:49 PM
Updated : 3 August 2020, 05:49 PM

সোমবার দুপুর ২টার দিকে কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের গিলাবাড়ী আর মির্জাপুর উপজেলার পুষ্টকামুরী চরপাড়া গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রয়াত খুশি (৪) উপজেলার গিলাবাড়ী গ্রামের ট্রাক চালক লাভলু তরফদারের মেয়ে। অন্যজন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বেতবাড়ী গ্রামের এনজিওকর্মী আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে আবির হোসেন (৩)। শিশু দুটি সম্পর্কে মামাত-ফুফাত ভাই-বোন।

এছাড়া, বিকালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নওশাদ হোসেন নামে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্র বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে।

কালিহাতীর নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শুকুর মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, প্রয়াত আবির মা-বাবার সাথে সকালে মামার বাড়িতে বেড়াতে আসে। খেলার এক পর্যায়ে বাড়ির পাশে বন্যার পানিতে খুশি ও আবির ডুবে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে ভূঞাপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালে আনার আগেই শিশু দুটি মারা যায় জানিয়ে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. কুমার বিশ্বজিৎ পাল বলেন, দুই শিশুর স্বজনদের কান্নায় পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে।

মাকে নিয়ে বন্যার পানিতে মজা করতে গিয়ে কিশোরের মৃত্যু

সোমবার বিকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে মির্জাপুর উপজেলা সদরের পুষ্টকামুরী চরপাড়ায় গোসল করতে গিয়ে নওশাদ হোসেন নামে এক কিশোর ডুবে মারা যায় বলে টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র উপ-সহকারী পরিচালক খন্দকার আবদুল জলিল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

এ সময় তার মা সঙ্গে ছিলেন।

প্রয়াত নওশাদ পুষ্টকামুরী গ্রামের হারুন অর রশিদ পান্নার ছেলে এবং মির্জাপুর সরকারি সদয় কৃষ্ণ মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

মৃতের স্বজনদের বরাত দিয়ে টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র উপসহকারী পরিচালক খন্দকার আবদুল জলিল সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে মির্জাপুর পুরাতন অংশের পুষ্টকামুরী চরপাড়া এলাকা বেশ কিছু দিন ধরে বন্যার পানিতে ডুবে রয়েছে। সেখানে মহাসড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ার দৃশ্য ফেইসবুকে ভাইরাইল হয়েছে। এতে স্থানীয়রা ছাড়াও আশপাশের এলাকার লোকজন ওখানে গোসল করতে আসা শুরু করে।

“সোমবার দুপুরে নওশাদ তার মা এবং কয়েকজন বন্ধু মিলেও সেখানে গোসল করতে যায়। এক সময় সাঁতার না জানা নওশাদ সবার অজান্তে স্রোতের তোড়ে সড়ক থেকে বিলের পানিতে তলিয়ে যায়।

তাকে দেখতে না পেয়ে সবাই খোঁজাখুঁজি শুরু করে জানিয়ে তিনি বলেন,  এক পর্যায়ে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দেওয়া হয়।

সেখানে ডুবুরি না থাকায় টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিস থেকে ডুবুরি দল আনা হয়। তারা খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মহাসড়ক থেকে আনুমানিক ৫০ গজ ভাটিতে পুষ্টকামুরী বিল থেকে নওশাদের মরদেহ উদ্ধার করে।