ঈদ-বিনোদনে মুখর যমুনার তীর

করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে বগুড়ার সারিয়াকান্দি, ধুনট ও সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায় যমুনা পাড়ের কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র ছিল ঈদ বিনোদনপ্রেমীদের ভিড়ে মুখরিত।

ইসরাইল হোসেন বাবুজিয়া শাহীন ও , বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 August 2020, 06:28 PM
Updated : 2 August 2020, 06:28 PM

এখানে আগতদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব মানার প্রবণতা দেখা যায়নি; অনেকের মুখেই মাস্ক ছিল না।

প্রতি বছরই ঈদের ছুটিতে যমুনা পাড়ে মানুষের এমন ভিড় হয়। কিন্তু এবার করোনাভাইরাসের কারণে এমন ভিড় প্রত্যাশিত না হলেও হয়েছে। প্রসাশনের পক্ষেও এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা দেখা যায়নি।

পর্যটন কেন্দ্রগুলো হলো বগুড়ার সারিয়াকান্দির কালিতলা গ্রোয়েন, দেবডাঙ্গার প্রেম যমুনার ঘাট, ধুনটের শহড়াবাড়ী, বানিয়াজান স্পার, সিরাজগঞ্জের মেঘাই ঘাট।

এসব এলাকায় রোববার বিকালে কয়েক হাজার মানুষের ভিড় দেখা গেছে।

বগুড়ার ধুনট উপজেলার বানিয়াজান স্পারে আসা পর্যটকদের কেউ সেতুতে বসে গল্প করছে, কেউ ঘুরে বেড়াচ্ছে

পরিবারের সদস্য কিংবা বন্ধু-বান্ধব মিলে কাছের এলাকা ও দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন এসেছেন এখানে। শিশু, তরুণ-তরুণী নববিবাহিত স্বামী-স্ত্রী সবার পদচারনায় মুখরিত ছিল যমুনার তীর। জনসমাগমকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দোকানপাটও বসেছে যমুনা তীরে। বিনোদনের জন্য যমুনায় ঘুরতে নৌকা, স্পিড বোট ছিল। কেউ কেউ পিকনিকেরও আয়োজন করেছে।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও ধুনটের যমুনার পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, নৌকা ভ্রমণে জনপ্রতি ২০ টাকা করে আধঘণ্টা নদীতে ঘুরে আসা যায়।

সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের মেঘাই এলাকায় যমুনা পাড়ে দেখা যায় জনপ্রতি ৫০ টাকা নিয়ে আধঘণ্টা যমুনায় ঘোরা যাচ্ছে নৌকায়।

বগুড়ার ধুনট উপজেলার বানিয়াজান আসা কেউ কেউ পিকনিকেরও ব্যবস্থা করেন

সারিয়াকান্দিরর কালিতলা গ্রোয়েনে আসা অনেকের সঙ্গে কথা হয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

বগুড়া শহর থেকে তমাল তার স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন মোটরসাইকেলে। দুজনের কারোরই মুখে মাস্ক ছিল না। ছবি তুলতে গেলে না তোলার অনুরোধ করেন।

তমাল বলেন, “শহরে পার্ক বন্ধ। অনেক দিন বাসায় রয়েছি। তাই যমুনার পাড়ে ঘুরতে এসেছি।”

মুখে মাস্ক কেন নেই কেন জিজ্ঞেস করলে বলেন, “মনে ছিল না। পরা উচিত; ভুল হয়ে গেছে।”

ধুনটের বানিয়াজান স্পারে কথা হয় শেরপুর উপজেলার শফিকুর রহমানের সঙ্গে।

ধুনটে আসা পর্যটকদের কেন্দ্র করে বিভিন্ন দোকান-পাটও বসানো হয়েছে

শফিকুর রহমান বলেন, “প্রায় চার মাস বাসায় বন্দি সবাই। ছেলে-মেয়ে নিয়ে এভাবে আর কতদিন থাকব। তাই এসেছি।”

সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের মেঘাই যমুনা ঘাটে রায়গঞ্জ থেকে আসা সাজেদুর রহমান বলেন, “ঢাকায় চাকরি করি; কোথাও বিনোদনের সুযোগ নেই। তাই এসেছি পরিবার নিয়ে। খুব ভালো লাগল।”

কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, “করোনার কারণে নিজেই পরিবার পরিজনকে নিয়ে স্টেশনে আছি। পুলিশ এবং জন প্রতিনিধিদের বলা আছে। মানুষ সচেতন না হলে কি করব।”

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়া বলেন, “আমি নিজেই স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে করোনায় আক্রান্ত। যাক তারপরও বিষয়টি দেখছি।”