স্বচেষ্টায় উদ্ধার হওয়া এ যুবককে রোববার রাত ৯টার দিকে তার বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
উদ্ধার হওয়া রুবেল প্রমানিক নিহত জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও কামারখন্দ সরকারী হাজী কোরপ আলী ডিগ্রি কলেজ শাখার সভাপতি এনামুল হক বিজয়ে বড় ভাই এবং সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার চালা শাহবাজপুর এলাকার আব্দুল কাদের প্রমানিকের ছেলে।
গত ২৬ জুন সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম স্মরণে ছাত্রলীগের দোয়া মাহফিলে যোগ দিতে যাওয়ার পথে শহরের বাজার স্টেশন এলাকায় বিজয়কে কোপায় প্রতিপক্ষ। ৯ দিন টিকিৎসাধীন থাকার পর পর ৫ জুলাই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বড় ভাই রুবেল বাদী হয়ে ছাত্রলীগের পাঁচ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় তিন জন গ্রেপ্তার রয়েছেন।
বগুড়ার শাহজাহানপুর থানার এসআই ওবায়দুল্লা আল মামুন জানান, রোববার দুপুর ২টার দিকে মাঝিরা ক্যান্টরমেন্ট সংলগ্ন রহিমাবাদ উত্তরপাড়া জামে মসজিদে নামাজ পড়তে আসার লোকজন রুবেলকে পায়। সংবাদ পেয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করা হয়েছে জানিয়ে এসআই মামুন বলেন, উদ্ধারের পর রুবেল পুলিশকে জানিয়েছে বিজয় হত্যা মামলা তুলে নিতে এবং বিজয়ের ব্যবহৃত মোবাইল ও সিমকার্ড নেওয়ার জন্য তাকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নেওয়া হয়েছিল।
“চিৎকারের কারণে বেকায়দায় পড়ে অপহরণকারীরা তাকে বগুড়ার মাঝিরা ক্যান্টরমেন্ট সংলগ্ন এলাকায় মাইক্রোবাস থেকে তাকে ফেলে দেয়।”
ঘটনার শুরু সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় হওয়ায় তাদেরকে ওই থানায় মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলেন মামুন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কামারখন্দ থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে রাতে বলেন, “বিষয়টি জানার পর আমরাও প্রামথিকভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। তবে কেউ এখনও লিখিত অভিযোগ করেনি।”
এ ঘটনার প্রসঙ্গে বগুড়ার শাহজাহানপুর রহিমাবাদ উত্তরপাড়া জামে মসজিদের নামাজ পড়তে যাওয়া স্থানীয় গোলাম রব্বানী মোবাইল ফোনে বলেন, “জোহর নামাজ শেষে মসজিদের সামনে গেলে ওই যুবক দৌড়ে এসে বলেন-‘আমাকে অপহরণ করা হয়েছিল। মারপিট করে মাইক্রোবাস থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। আমি অসুস্থ, মাথায় একটু পানি ঢালুন।”
রুবেলের বাবা আব্দুল কাদের প্রমানিক বলেন, রোববার সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে ছেলে রুবেল জামতৈল বাজারে যাবার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। দুপুরে তিনি সংবাদ পান তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছিল।
ছাত্রনেতা বিজয় হত্যাকাণ্ডের পর ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এসব ঘটনায় পাল্লাপাল্টি আরও চারটি মামলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দলের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেওয়ায় কেন্দ্রীয় কমিটির হস্তক্ষেপে ৮ জুলাই থেকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় তালা বন্ধ এবং সকল অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের দলীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশ বর্তমানে মামলাটির তদন্ত করছেন।