টেকনাফের চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা নিহত

কক্সবাজারের টেকনাফে চেক পোস্টে গাড়ি তল্লাশির সময় এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2020, 11:21 AM
Updated : 1 August 2020, 04:30 PM

শুক্রবার রাত ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন জানান।

নিহত সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর। তিনি যশোর ক্যান্টনমেন্ট এলাকার বীর হেমায়েত সড়কের মৃত এরশাদ খানের ছেলে।

ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করার পাশাপাশি দুইজনকে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় দুটো মামলা দায়ের করা হয়েছে থানায়।

পুলিশ সুপার মাসুদ বলেন, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে শামলাপুরের পাহাড়ি এলাকায় ‘রোহিঙ্গা ডাকাত দল’ হাকিম বাহিনীর আস্তানায় ‘সশস্ত্র লোকজনের আনাগোনা’ দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা।

“তারা জানায়, ওই পাহাড়ি এলাকা থেকে বোরকা পরিহিত দুই লোককে নেমে এসে একটি প্রাইভেট কার নিয়ে মেরিন ড্রাইভের দিকে যেতে দেখেছে তারা।”

ওই খবরে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের শামলাপুর এলাকার পুলিশের চেকপোস্টে সতর্কতা বাড়ানো হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, “একটি গাড়ি চেকপোস্ট পার হওয়ার সময় তল্লাশির জন্য সেটি থামায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা। ওই গাড়ির দুজনের মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর হিসেবে পরিচয় দিয়ে তল্লাশিতে বাধা দেন।

“এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তারা তর্ক-বিতর্কে জড়ায়। এক পর্যায়ে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী ওই ব্যক্তি পিস্তল বের করে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করার চেষ্টা চালায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ তখন গুলি ছোড়ে। এতে ওই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন।”

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন।

তিনি বলেন, পুলিশ ওই গাড়ি তল্লাশি করে জার্মানিতে তৈরি একটি পিস্তল, নয়টি গুলি, ৫০টি ইয়াবা, দুটি বিদেশি মদের বোতল এবং চার পোটলা গাঁজা উদ্ধার করেছে। ওই গাড়িতে থাকা অন্যকজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার বলেন, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ একটি তথ্যচিত্র নির্মাণের কথা বলে গত প্রায় একমাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে অবস্থান করছিলেন। সেখানে একজন নারী এবং তিনজন পুরুষও ছিলেন তার সঙ্গে।

রাতের ঘটনার পর পুলিশ ওই রিসোর্টে অভিযান চালিয়ে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে গ্রেপ্তার দুজনের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

এসপি জানিয়েছেন, ওই ঘটনায় টেকনাফ থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।