শরীয়তপুরে বিদ্যালয়সহ ৫০ বসতবাড়ি পদ্মায় বিলীন

পদ্মার ভাঙনে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় একটি বিদ্যালয়সহ ৫০টি বসতবাড়ি একদিনে তলিয়ে গেছে।

কে এম রায়হান কবীর শরীয়তপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2020, 06:23 PM
Updated : 29 July 2020, 06:23 PM

বুধবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার চরআত্রা ইউনিয়নের বসাকেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি একতলা ভবন বিলীন হয়ে যায় বলে

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান।

এছাড়া গত একমাস ধরে নড়িয়া উপজেলার চারটি মসজিদ, একটি নুরানী মাদ্রাসা, জাজিরার চারটি ইউনিয়ন ও নড়িয়া উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ৫০০ বসত বাড়ি পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয় বলে প্রশাসন জানিয়েছে।

সরেজমিন বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে জানা গেছে, বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে পদ্মা নদীবেষ্টিত জাজিরা উপজেলার বিলাশপুর, কুন্ডেচর, পূর্বনাওডোবা, নড়িয়া উপজেলার চরআত্রাসহ দুইটি ইউনিয়নে পদ্মার ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়।

বসাকেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে এই বিদ্যালয়ের ত্রিশ গজ দূরে থাকা দ্বিতল অন্য ভবনটিও। এটিও যেকোনো পদ্মায় তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে আছে।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফ উজ্জামান ভুইয়া বলেন, পদ্মার প্রবল স্রোতে এ যাবত জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর, বড়কান্দি ও নাওডোবা ইউনিয়নের ৪০৩টি বসত বাড়িসহ অনেক ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে।

ইতোমধ্যে ভাঙন কবলিতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে এবং ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।

নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়ন্তী রুপা রায় বলেন, পদ্মার প্রবল স্রোতে চরাত্রা ইউনিয়নের বসাকেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একতলা একটি পাকা ভবন পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়েছে। ৩০ গজ দূরত্বে থাকা অন্য দ্বিতল ভবনটিও রয়েছে ভাঙন ঝুঁকিতে।

“এছাড়াও আজ বসাকেরচরের ৫০টি বসত বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। এর আগে আরও ৪৫টি বসতবাড়ি পদ্মায় বিলীন হয়েছে।”

ভাঙন কবলিতদের তালিকা প্রস্তুত করে তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান।

শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, “পদ্মার স্রোত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে স্কুল ভবনটি রক্ষার জন্য জিওব্যাগ ডাম্পিং করেছিলাম; কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। তবে ঝুঁকির বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে অবহিত করা ছিল।”

তিনি আরও বলেন, বর্ষা মৌসুম চলে যাওয়ার পর ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালু রাখার জন্য ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভাঙন কবলিত পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে। ওই সকল পরিবারগুলোকে ঘর নির্মাণের জন্য ঢেউটিন ও নগদ টাকা দেওয়ার বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এক সপ্তাহের মধ্যে চাঁদপুরে একটি বিদ্যালয় মেঘনায় এবং মাদারীপুরে দুইটি বিদ্যালয় পদ্মায় তলিয়ে গেছে।