ঈশানচন্দ্রের পরিত্যক্ত সম্পত্তি ‘জালিয়াতি করে দখলের চেষ্টা’

ফরিদপুরে জমিদার ঈশানচন্দ্র সরকারের পরিত্যক্ত সম্পত্তি জালিয়াতির মাধ্যমে দখলচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।

শেখ মফিজুর রহমান শিপন ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2020, 08:46 AM
Updated : 28 July 2020, 08:50 AM

ঈশানচন্দ্রের গোমস্তা ক্ষিতীশ চন্দ্রের ছেলে উজ্জ্বল সরকার এই সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ দিয়েছেন ফরিদপুর নিউ মার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ী।

সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ্ মো. সজীব জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর তারা ঘটনা তদন্ত করে দেখছেন। ঈশানচন্দ্রের পারিবারিক জমিজমার দলিল থেকে জানা গেছে, যারা ওই পরিবারের উত্তরাধিকার দাবি করছেন তাদের কোনো অস্তিত্ব নেই।

তিনি জানান, ফরিদপুর শহরের ১১৮ নম্বর মূল মৌজার ঝিলটুলী ও আলিপুর মহল্লার প্রায় ২০ একর জমিসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন মৌজার ইশান পরিবারের ভূসম্পত্তি রয়েছে।

এর বাইরে রাজেন্দ্র কলেজ, সদর হাসপাতাল, ঈশান বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, ফরিদপুর মিউজিয়াম, সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়, জেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয়, পাট কর্মকর্তার কার্যালয়, তিতুমীর বাজার, চকবাজার ও নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন স্থাপনা ইশান পরিবারের দান করা সম্পত্তিতে গড়ে উঠেছে জানান এই ভূমি কর্মকর্তা।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ঈশানচন্দ্র সরকারের গোমস্তা ছিলেন ক্ষিতীশচন্দ্র সরকার। ২০১২ সালে অর্পিত সম্পত্তি অবমুক্তি আইনের পর ঈশান সরকারের উত্তরাধিকার দাবি করেন ক্ষিতীশের ছেলে উজ্জ্বল সরকার।

কিন্তু তিনি কেমন উত্তরাধিকার তা বলতে পারেননি।

উজ্জ্বল বলেন, “যেভাবে উত্তরাধিকার হয় আমিও সেইভাবে হয়েছি।”

উত্তরাধিকার সম্পর্কে ঈশান গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মজনু বলেন, আরএস এবং সিএস খতিয়ানের রেকর্ডপত্র, দলিলদস্তাবেজ ও মামলার নথি ঘেঁটে দেখা গেছে, সবখানেই ঈশান চন্দ্র সরকারের তিন ছেলে থাকার তথ্য রয়েছে। ফরিদপুর মুনসেফ আদালতে ১৯৬১ সালের ১৬/৬১ নম্বর মামলার নথিতে দেখা যায়, ডিক্রিদার পক্ষ হিসেবেও রয়েছে এই তিন ছেলের নাম। এছাড়া ১৯৪৪ সালের জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে ঈশান চন্দ্র সরকারের তিন ছেলের নামে তিনটি দলিল করা হয় যেখানে অন্য কারও নাম নেই।

উজ্জ্বলকে উত্তরাধিকার সনদ দিয়েছেন ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুজ্জামান চৌধুরী পংকজ।

ওই সনদে বলা হয়েছে, ঈশানের ছয় ছেলে ছিলেন। তাদের একজন হলেন উজ্জ্বলের বাবা ক্ষিতীশচন্দ্র।

এ ব্যাপারে সাবেক চেয়ারম্যান নূরুজ্জামান চৌধুরী পংকজ বলেন, “ইউপি সদস্যরা প্রবীণ নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলে যে প্রতিবেদন দিয়েছিলেন সেই পরিপ্রেক্ষিতে সনদ দেওয়া হয়েছিল। এ ব্যাপারে জটিলতা সৃষ্টি হলে ভূমি অফিসে আমাদের তলব করা হয়েছিল। তবে যারা ওই সনদ নিয়েছিলেন তারা তখন হাজির হননি।”

তবে উজ্জল দাবি করেছেন, ভূমি অফিসের শুনানিতে অংশ নিতে তিনি সেখানে হাজির হয়েছিলেন।

তিনি বলেন, “আমি ঈশান সরকারের বৈধ ওয়ারিশ। একটি পক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে বানোয়াট অভিযোগ করছে। বর্তমানে আমরা ছাড়া আর কোনো বৈধ ওয়ারিশ নেই ঈশান চন্দ্র সরকারের।”