কলেজে সভাপতি মনোনয়ন জটিলতায় শিক্ষকের বেতন বন্ধ

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায় একটি কলেজে পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনোনয়নের জটিলতায় ছয় মাস বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না শিক্ষক-কর্মচারীরা।

নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 July 2020, 03:51 PM
Updated : 26 July 2020, 04:28 PM

মীরগঞ্জ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের এই ৪১ শিক্ষক-কর্মচারী পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।

শিক্ষক-কর্মচারীরা জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করে ওই কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বজলুর রহমানকে। তার মেয়াদ ছিল চলতি বছরের ১২ জুন পর্যন্ত। কিন্তু দায়িত্ব পাওয়ার আড়াই মাসের মাথায় গত ২৯ জানুয়ারি তার স্থলে আফজালুল হককে সভাপতি করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

এই পরিস্থিতিতে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেন বজলুর রহমান। এদিকে গত ১২ জুন আফজালুল হকের মেয়াদ শেষ হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আগামী ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ায়।

এই জটিলতায় পড়ে গত জানুয়ারি থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন করতে পারছেন না কলেজের ৪১ শিক্ষক কর্মচারী।

এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুজার রহমান বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশোধিত সংবিধি ২০১৯ এর ১২ নম্বর ধারায় উল্লেখ আছে- মামলা-মোকদ্দমা বা অন্য কোনো জটিলতায় গভর্নিং বডির সভাপতির অনুপস্থিতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-বিলে বিভাগীয় কমিশনার অথবা জেলা প্রশাসক অথবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বাক্ষর করতে পারবেন।

“এ নিয়ম অনুযায়ী আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-বিল প্রদানের স্বাক্ষরের জন্য কাগজপত্র জমা দিয়েছি। কিন্তু ছয় মাসেও স্বাক্ষর না হওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-বিল পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি।” কলেজটিতে ২৫ জন শিক্ষক ও ১৬ জন কর্মচারী রয়েছেন বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব হাসান বলেন, “ওই কলেজে দুইজন অধ্যক্ষ ও দুইজন সভাপতি পদ নিয়ে দাবিদার রয়েছেন। সভাপতির বিষয়ে উচ্চ আদালতে মামলা হয়েছে। এ অবস্থায় আমি বলেছি দুই পক্ষ এক হয়ে আসলে তাদের বেতন-ভাতার বিলে স্বাক্ষর করা হবে।”

কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “ছয় মাস ধরে বেতন-ভাতা না পাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর কাটাচ্ছি।”

সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক আরিফ হোসেন বলেন, “আমাদের অবস্থা এতোটাই খারাপ যে এখন সুদে টাকা ধার করে চলতে হচ্ছে। বেতন বন্ধ থাকায় আসন্ন ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবে আমাদের পরিবার।”

অফিস সহায়ক রবিউল আলম বলেন, “এই চাকরির ওপর নির্ভর করে আমার সংসার এবং দুই ছেলে ও এক মেয়ের লেখাপড়া চলে। ছয় মাস ধরে বেতন-ভাতা তুলতে পারছি না। এখন সংসার চালাচ্ছি ধার-কর্জ করে। ১০ হাজার টাকা দাদন নিয়ে রোজার ঈদ করেছি। এবারের ঈদে কোনো ব্যবস্থা এখনও করতে পারিনি।”